চাঁদা আদায়ের ছবি ধারণ

সাংবাদিককে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নিল ট্রাফিক সার্জেন্ট


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, ৩১শে জানুয়ারী ২০২৪


সাংবাদিককে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নিল ট্রাফিক সার্জেন্ট
অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজাহারুল ইসলাম। ফাইল ছবি

কক্সবাজারে অবৈধভাবে পার্কিং করা যাত্রীবাহি বাস থেকে চাঁদা আদায়ের ছবি ধারণ করায় এক সাংবাদিককে মারধর করেছে মাজাহারুল ইসলাম নামের এক ট্রাফিক সার্জেন্ট। এই সময় সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ও পত্রিকায় আইডি কার্ডও ছিনিয়ে নেয়া হয়।


বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর মোড় সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড


মারধরে শিকার সাংবাদিক রাশেদুল মজিদ, কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকালের কক্সবাজার পত্রিকার বার্তা প্রধান। অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজাহারুল ইসলাম কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত।


রাশেদুল মজিদ জানিয়েছেন, সকালে ব্যক্তিগত কাজে একটি অটোরিকশা যোগে বাস টার্মিনালে যাওয়ার সময় কলাতলীর মোড়ে যত্রতত্রভাবে বাস পাকিং করে যাত্রী উঠা-নামার কারণে তীব্র যানজট লক্ষ করা গেছে। তিনি ওই সময় নিজের মোবাইল বের করে ছবি ধারণ করেন। এসময় ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ট্রাফিক সাজেন্ট অবৈধভাবে পাকিং করা একটি বাস চালক থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। এই ছবিটি ধারণ করার সাথে সাথে সার্জেন্ট দৌঁড়ে এসে মারধর করতে করতে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন। এসময় সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় পত্র কার্ডটি দেখালে তাও ছিনিয়ে নেন।


রাশেদুল মাজিদ বলেন, ‘এ ঘটনার পর পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করেছি। একই সঙ্গে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি।’


কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর পর সাংবাদিককের ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফোন ও কার্ডটি উদ্ধার করা হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশের নিজস্ব তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত সার্জেন্টের বিরুদ্ধে পুলিশের নিজস্ব নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। মোবাইল ফোন ও কার্ড সাংবাদিককে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।


অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজাহারুল ইসলাম মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মোবাইল কেড়ে নিতে গিয়ে হাতা-হাতির ঘটনা ঘটেছে।’


কেন মোবাইল ছিনিয়ে নিতে হল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা একটি অনাকাংখিত ভুল বুঝাবুঝি।’


এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর ১২ টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে সামাজিক সংগঠন ‘আমরা কক্সবাজারবাসি’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সহ ট্রাফিকের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হয়।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে আইস ও ইয়াবাসহ আটক ২


অপর এক বিবৃতি কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন ও কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এক ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রকাশ্যে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত বেপরোয়া আচরণ। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়ার বিষয় না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়।


আরএক্স/