জাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সহায়তায় পালিয়ে গেলেন ধর্ষক মোস্তাফিজ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৪ অপরাহ্ন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৪


জাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সহায়তায় পালিয়ে গেলেন ধর্ষক মোস্তাফিজ
ছবি: জনবাণী

সজীবুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (৪৫তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান গোপনে হল ক্যান্টিনের পেছন দরজা দিয়ে ছাত্রলীগের সহায়তায় পালিয়ে গিয়েছেন।


শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের উপস্থিতিতে ধর্ষক মোস্তাফিজ ছাত্রলীগের সহায়তায় হল ক্যান্টিনের তালা ভেঙে পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ক্যান্টিনের তালা ভেঙ্গে ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন মীর মোশারফ হোসেন হল ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মী।


অভিযুক্তকে সাহায্যকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের তিনজন হলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, ৪৬ তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিক ও ৪৫ তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান। পরবর্তীতে পুলিশ তাদেরকে হল থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।


বিক্ষুব্ধকারীরা জানান,  যে অপরাধ করে আর যিনি অপরাধীকে সাহায্য করেন তারা সমান অপরাধী। ধর্ষণের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর! 'যেখানেই ধর্ষণ, সেখানেই হবে প্রতিবাদ' এই স্লোগানকে সামনে রেখে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে চার দফা দাবী পেশ করেন তারা।


  1. ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামী ও তার সহায়তাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
  2. ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামী ও তার সহায়তাকারীদের আটক করতে না পারলে হল প্রোভস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।
  3. বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বাদী হয়ে ধর্ষক এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
  4. এম এইচ হল সহ সকল হলের অছাত্রেরকে ৩ দিনের মধ্যে বের করে দিতে হবে।


সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।


ভুক্তভোগীকে তার স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে আসামীদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।


জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ_সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, গতকালের ঘটনাটি শুনে আমরা খুবই মর্মাহত। ছাত্রলীগ কখনই  অন্যায়কারী, অপকর্মকারী, দুষ্কৃতিকারিকে প্রশ্রয় দেয় না। আপনারা জানেন যে আমরা গতকাল যখনই ঘটনাটি শুনেছি সাথে সাথেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আমদের জায়গা থেকে এবং জাবি শাখা ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি জানিয়েছি। তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছি। কেন্দ্র সেটি আমলে নিয়ে সাথে সাথেই তাকে বহিষ্কার করেছে। অন্যায়কারী যেই হোক তার কোন দল নেই, তার কোন ব্যক্তিত্ব নেই, তার পরিচয় হচ্ছে সে একজন অন্যায়কারী। গত কালের যে ঘটনাটি এটি খুবই নিন্দনীয় কাজ খুবই জঘন্যতম কাজ। আমরা চাই তার শাস্তি সর্বোচ্চ হোক এবং এ বিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যথেষ্ট সহযোগিতা করব।


আরএক্স/