জানুয়ারিতে রপ্তানিতে রেকর্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৪ অপরাহ্ন, ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরপর তিন মাস রপ্তানি কমেছে। উদ্যোক্তাদেও হাতে রপ্তানি আদেশও খুব বেশি নেই। আগের মতোই রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নানা সমস্যা। এরই মধ্যে আকস্মিকভাবে রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি হলো জানুয়ারি মাসে। ৫৭২ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে জানুয়ারিতে, দেশের ইতিহাসে একক মাসের সর্বোচ্চ রপ্তানি। এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি ছিল ৫৩৭ কোটি ডলার। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড ছিল ৪৯১ কোটি ডলার।
রপ্তানি আয়ে রেকর্ড অনেকগুলো পরিবর্তনের সুফল মনে করে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, জানুয়ারি মাস ৩১ দিনে হওয়ায় বেশি উৎপাদনের পাওয়া গেছে। নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হয়েছে ডিসেম্বর থেকে। বর্ধিত মজুরি পরিশোধে বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নিতে বিজিএমইএ পক্ষ থেকে ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের ক্রেতাদের সাথে দও নিয়ে আলোচনা করেছে। এইচঅ্যান্ডএমসহ কোন কোন ব্র্যান্ড ও ক্রেতা সাড়া দিয়েছে। পোশাকের দাম বাড়িয়েছে। সেটাও রপ্তানি আয় বাড়ার একটি কারণ। এছাড়াও নতুন বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধিও একটি কারণ। এসব বাজারের মধ্যে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় পণ্যের মূল্য বেশি পাওয়া যায়। পণ্যে মূল্য সংযোজনের সুবিধা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সুবিধা আগামী প্রতিটি রপ্তানি প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন: টাকা ফেরত দেয়ার কার্যক্রম শুরু করলো ইভ্যালি
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারোর তথ্য থেকে জানা যায়, গত অক্টোবরে রপ্তানি কমতে শুরু করে। ২০২২ সালের অক্টোবরের থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবরে রপ্তানি প্রায় ১৪ শতাংশ কম হয়। নভেম্বরে রপ্তানি কমে যায় ৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি কম হয় ১ শতাংশের কিছু বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো (ইপিবি) হালনাগাদ রপ্তানি প্রতিবেদন গত ২৮ জানুয়ারি প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের চেয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। রপ্তানি পরিমাণে বেশি হয়েছে ৫৯ কোটি ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। রেকর্ড রপ্তানি সত্ত্বেও গত মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
জানুয়ারি মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৯৭ কোটি ডলার, যা ২০২৩ সালের জানুয়ারির চেয়ে ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ‘সিঙ্গেল ক্লিক রিটার্ন পলিসি’ চালু করলো ইভ্যালি
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, এ রপ্তানিকে যথেষ্ট মনে করেন না তারা। তবে একেবারে খারাপও বলছেন না। কারণ চলমান বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদেও ব্যবসা খুব বেশি ভালো নয়। এ বছর হয়তো পরিস্থিতি এরকমই যেতে পারে। এর মধ্যে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে রপ্তানিতে খুব ভালো কিছু আশা করা যায় না।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্য়ন্ত গত ৭ মাসে গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩.৪৫ শতাংশ। ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে এ সময়। ২০২২-২৩ অর্থ বছওে একই সময়ে যা ছিলো ২ হাজার ৭৪২ কোটি ডলার।
জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থ বছরের গত ৭ মাসে আগের অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি বেশি হয়েছে ২.৫২ শতাংশ। তবে রপ্তানি আয় ওই সময়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.২৮ শতাংশ কম। মোট ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ডলারের মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয় এ সময়। যে পরিমাণ আগের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি ডলার।
জেবি/এসবি