সীমান্ত পথে ভারতে সোনা পাচার চেষ্টায় আটক ৩


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:২৫ অপরাহ্ন, ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪


সীমান্ত পথে ভারতে সোনা পাচার চেষ্টায় আটক ৩
ছবি: জনবাণী

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পথে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ পাচারে চেষ্টা করে থাকেন স্বর্ণ চোরাকারবারিরা। স্বর্ণ চোরাকারবারিরা সীমান্তে বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা উপেক্ষা করে ও বিজিবি সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছক এঁকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ পাচার করে থাকেন তারা। স্বর্ণ পাচারের ক্ষেত্রে সীনান্ত এলাকায় বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা ও অভিযানে স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার হয় স্বর্ণ চোরাকারবারিরা। তবে স্বর্ণ পাচারের সময়ে গ্রেফতার হওয়া চোরাকারবারিদের বেশিরভাগ ভাড়ি হিসেবে স্বর্ণ পাচারের কাজে জড়িত থাকেন, আবার মুলহোতারাও ধরা পড়েন। একারনে সীমান্ত পথে ভারতে স্বর্ণ চোরা চালানের সময় ভাড়িরা গ্রেপ্তার হলেও কখনো কখনো স্বর্ণ  চোরাকারবারির মূলহোতা রাঘব বোয়ালরা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হাটখোলা সীমান্ত এলাকা থেকে ১০টি স্বর্ণের বার সহ তিন জন সোনা চোরাচালান কারবারীদের গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি সদস্যরা।


আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের শব্দে অস্বস্তিতে সীমান্তবাসী, কাটছে না উদ্বেগও


বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার উচনা সীমান্ত এলাকা ওই তিন  জন পাচারকারীকে আটক করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পাঁচবিবি উপজেলার পূর্ব উচনা গ্রামের রহিদুল ইসলাম (৪০), মঞ্জুর  রহমান (৪২) ও ফরিদুল ইসলাম (৪৫)।


বিজিবি জানায়, সোনা চোরাচালনকারী বাংলাদেশ থেকে ভারতের সোনা পাচার করছে,  এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের  জোয়ানরা সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালানা করে ১০টি স্বর্নবার, ১টি মোটরসাইকেল, ৩টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৯ হাজার ৩০ টাকা সহ তাদের আটক করা হয়। আটককৃত মালামালের বর্তমান বাজার মূল্য হবে ১ কোটি,  ১২ লাখ, ৬ হাজার ৪১৯ টাকা। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জব্দকৃত  মালামাল সহ  আটককৃতদের পাঁচবিবি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান উপ অধিনায়ক  মেজর আতিক হাসান। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টায় জয়পুরহাট ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-অধিনায়ক মেজর আতিফ হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেন ।


অনুসন্ধানে জানাগেছে, কিছু অসাধু চোরাকারবারি অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা করে থাকেন। এক্ষেত্রে ভারতীয় কিছু চোরাকারবারিরা এদের সঙ্গে জড়িত থাকে বলে জানাগেছে। চোরাকারাবারিরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ পাচারের ক্ষেত্রে নিরাপদ রুট হিসেবে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা টার্গেট করে থাকেন। স্বর্ণ পাচারের ক্ষেত্রে প্রভাবশালীরা জড়িত থাকলেও তারা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকেন অনেক সময়। স্বর্ণ চোরা চালানের ক্ষেত্রে তারা ভাড়িদের  ব্যবহার করে থাকেন। ভাড়ি দিয়ে স্বর্ণ পাচারের ক্ষেত্রে মূলহোতারা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। কারন স্বর্ণসহ ভাড়িরা ধরা পরলেও তারা স্পটে থাকেন না। এক্ষেত্রে মামলাও হয় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে।


আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বিস্ফোরণের শব্দে আবারও কাঁপছে বাংলাদেশ সীমান্ত


বাংলাদেশ জুয়েলারী এ্যাসোসিয়েশনের পাঁচবিবি শাখার সভাপতি হুমায়ান কবির বলেন, বাংলাদেশ থেকে বৈধপথে ভারতে সোনা পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে হয়। কিন্তু অবৈধভাবে যদি বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচার করা যায় তাহলে সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে হয়না। সেইজন্য চোরাকারবারিরা সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স ফাঁকি দিতে অবৈধভাবে চোরা চালানের পথ খোঁজে। অবৈধভাবে সোনা পাচারে লাভবান হয় পাচারকারীরা। আর সোনা পাচারে বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যাবহার করে তারা। এ কারণে চোরাকারবারিরা সীমান্ত এলাকা বেচে নেয়। যদি বৈধপথে এসব সোনা পাচার হত তাহলে সরকারের অনেক রাজস্ব বাড়ত।


পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.ফয়সাল বিন আহসান বলেন, সীমান্তে স্বর্ণ পাচারকারী আটকের বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে এজহার পেয়েছি। মামলা রুজু হয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হবে।


আরএক্স/