জাবিতে অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার সাথে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংহতি
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:০৯ অপরাহ্ন, ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ফেলার ঘটনায় অনশনরত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনামের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন— মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটায় সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে এ সংহতি প্রকাশ করেন।
এসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন সংহতি জানিয়ে বলেন, এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি তারা মেনে নিতে পারিনি। আমরা সাথে সাথে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছি। অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার সাথে আমরা একমত প্রকাশ করে দোষীদের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি দুই রাতে গ্রাফিতি আঁকার কাজ হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একেবারে সদর দরজায় সারা রাত কাজ হলো। এখানে কেউই দেখতে পেল না? নাকি এখানে অন্য কিছু আছে?
আরও পড়ুন: একক প্যানেল ও এক স্বতন্ত্রের নির্বাচনে কুবি শিক্ষক সমিতি
সংগঠনের অন্যতম সংগঠক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, যেখানে জাতির পিতাকে অবমাননা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করা হয়েছে সেখানে তারা বিচারে শৈথিল্য দেখিয়েছে। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। এ ঘটনা ঘটে যাওয়ার ১৪—১৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য প্রশাসনের অন্যদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন কিনা আমার সন্দেহ। উনি কেন এ বিষয়টিকে এত হালকাভাবে নিলেন? এ অবমাননাকে তিনি মোটেই গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়টি আমাদের আহত করেছে। এখানে কারা গ্রাফিতি এঁকেছে এটা তো স্পষ্ঠ। এর পেছনে কুশীলব কারা; দায়ী কারা আর কারা শৈথিল্য দেখিয়েছে এটা খুঁজে বের করা দরকার।
এসময় অনশনরত ছাত্রলীগ নেতা এনাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লেবাসধারী অনেক শিক্ষক আছে। তারা মুখোশ ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অবমাননা করে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত করে বের করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
এসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী ও আইবিএর অধ্যাপক ড. আইরিন আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইবিতে বসন্ত উৎসব
উল্লেখ্য সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাবি শিক্ষক সমিতির নিবার্চনে অধ্যাপক মোতাহার হোসেন সভাপতি, অধ্যাপক সোহেল আহমেদ সহ—সভাপতি এবং অধ্যাপক খো: লুৎফুল এলাহী ও আইরিন আক্তার দু’জনেই কার্যনিবার্হী সদস্য নিবার্চিত হয়েছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে আমরণ অনশন শুরু করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ—সভাপতি এনামুল হক এনাম। ৫৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও অনশন অব্যাহত রেখেছেন তিনি। তার উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো— বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৮ দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে জাবি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এ গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। গ্রাফিতিতে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। এর পাশেই লিখা হয় ‘ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী’। এছাড়া গ্রাফিতির নিচে ছাত্র ইউনিয়নের নাম লিখা হয়। নারীর অবয়বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পূর্বের প্রতিকৃতি মুছে ফেলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে অনশনে বসেন শাখা ছাত্রলীগের সহ—সভাপতি এনামুল হক এনাম। এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জেবি/এসবি