অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪


অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
বক্তব্য রাখছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান

এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান বলেন, “রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুসমূহ এন্টিমাইক্রোবিয়াল ঔষধসমূহের প্রতি তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন বৃদ্ধি করে চলেছে। ফলে বিশ্ব জুড়ে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স একটি মারাত্বক জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসাবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ এ সমস্যায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রাণিস্বাস্থ্য সুরক্ষায় যে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার করা হয় তা যেন যথাযথ হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) সোমবার দুপুরে ঢাকার গুলশানে বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা (WOAH) এর কারিগরি সহায়তায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে এন্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার ও করণীয় বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।”


প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাউদ্দিন, বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. নাহোকো ইডা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ট্যারেন্স টিনো ফুসায়ার বক্তব্য প্রদান করেন।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, “অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল মানুষ এবং প্রাণী উভয়ের জন্য একটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারে প্রাণিস্বাস্থ্যের উপর যেমন প্রভাব রয়েছে তেমনি পরিবেশের উপরও প্রভাব রয়েছে। তবে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে এন্টিমাইক্রোবিয়ালস এর ব্যবহারের পরিমান জানা এবং এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।”


এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)কে  জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “একটা সময় জীবন বাঁচানোর তাগিদে আমরা এন্টিবায়োটিক পাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিলাম, কিন্তু বর্তমানে এর যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে এটি ভয়ানক রূপে ধরা দিয়েছে। তিনি এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর অশুভ প্রভাব যেন গবাদিপশু, মাছ, মাংসে না পড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।” 


আরও পড়ুন: সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর


প্রাণিচিকিৎসায় রেজিস্ট্যার্ড ভেটেরিনারিয়ানের প্রেসক্রিপশন এবং পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার করা উচিত নয় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, “মানব ও প্রাণিস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)-এর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের কৃষকদের সচেতন করা দরকার। তিনি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল খামার পর্যায়ে কার্যকর নিয়ন্ত্রকের কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।”


মন্ত্রী বলেন, “প্রাণিজ আমিষ যেমন মাছ, মাংস, ডিম উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং দুধ উৎপাদনে বর্তমানে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও অচিরেই তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিক্যাল নেতৃত্বে যেমন বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রে একযোগে এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো বলে আশা প্রকাশ করেন।”


আরও পড়ুন: দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সোচ্চার হতে হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী


এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে এক ধরণের চেতনাবোধ আগে থেকেই আছে উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, “এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বা ক্যাম্পেইন করা হলে মানুষ আরও সচেতন হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ ভোটের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সায়মা ওয়াজেদ তাঁর জীবন মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন এবং স্বাস্থ্য সেবায় সায়মা ওয়াজেদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা এ সময় উল্লেখ করেন।”


তিনি জানান, “বাংলাদেশ একটি জাতীয় এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সার্ভিলেন্স কর্মপরিকল্পনা ২০২০-২০২৫ প্রণয়ন করেছে এবং একই সাথে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক জাতীয় কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা (২০২৩-২০২৭) চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনার আওতায় মানব স্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য এবং পরিবেশসহ সকল খাত এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবেলায়  ওয়ান হেলথ পদ্ধতিতে একসাথে কাজ করবে।  তিনি এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)-এর গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন।”


জেবি/এসবি