গত বছর ২৬০ কোটি টাকার চা উৎপাদিত হয়

সরব হচ্ছে পঞ্চগড়ের চা কারখানা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১৭ অপরাহ্ন, ২৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪


সরব হচ্ছে পঞ্চগড়ের চা কারখানা
ফাইল ছবি।

চা পাতার গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে । চাহিদার সাথে সাথে বেড়েছে উৎপাদনও। অথচ কাঁচা চা পাতার দর নিয়ে নানা জটিলতা যেনো কোনো ভাবেই কাটছেনা। দফায় দফায় মিটিং করে ও এ সমস্যা সমাধান হয়নি।


স্থানীয় প্রশাসন এ নিয়ে একাধিকবার নির্ধারিত দাম বেঁদে দিলে ও তা কার্যকর  না হওয়ায় সেই দামের শঙ্কা নিয়ে শুক্রবার (১ মার্চ) চালু হচ্ছে জেলার চা কারখানাগুলো।প্রতি বছরের মত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ছিল কাঁচা চা পাতা তোলা। এ কারণে বন্ধ ছিল কারখানা গুলো। 


আরও পড়ুন: সয়াবিনের বিকল্পে সুর্যমূখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে শ্রীনগরের কৃষকদের 


পঞ্চগড়ে ২০০০ সালে ৪৫৪ একর পতিত সমতল ভূমিতে চা চাষের মধ্য দিয়ে দেশে সে সময় তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পঞ্চগড়ে চা চাষের সূচনা হয় ।চা চাষীরা এক বুক আশা নিয়ে তাদের জমিতে চা চাষ করে। শুরুর দিকে প্রতিকেজি কাঁচা চা পাতা ২০ টাকার উপড়ে গিয়ে ২৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে চা চাষীরা।এরপরে শুরু হয় দর পতন।


চা উৎপাদন বৃদ্ধি ও শীত মৌসুমের কারণে ডিসেম্বর থেকে কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হয়। মার্চ মাস আসার শুরুতেই আবার সচল হয় এ সব কারখানা। কিন্তু বার বার হোচঁট খায় চা চাষী দাম নেই ‘ পাতার। গত মৌসুমে কাচাঁ চা পাতার দাম নিয়ে  বার বার চলে মিটিং। দাম বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সহসা কার্যকরী না হওয়ায় চা চাষীদের অনেকেই চা বাগান কেটে ফেলে।


সদর উপজেলার বসুনিয়া পাড়ার চা চাষী কাওসার হামিদ সজীব জানান, গতবার সর্বশেষ প্রতিকেজি কাঁচা পাতার দাম পেয়েছি ১৭ টাকা। অথচ বাজারে যান ১০০ গ্রাম চা পাতা ৫০ টাকা। জানা যায় ওই বসুনিয়াপাড়ায়  সব মিলে ৫শত বিঘার উপড়ে চা বাগান রয়েছে।   

 

এদিকে ২০ হাজার কাচা চা পাতা আহরনের সাথে জড়িত।এছাড়া  অভিযোগ রয়েছে ১০০ কেজিতে ১০ কেজি পাতা কেটে  নেন কোম্পানী গুলো। চা বোর্ড পঞ্চগড় এর আওতায় পঞ্চগড় জেলায় ২৭ টি ও ঠাকুরগাঁও জেলায় ১টি  চা বোর্ড অনুমোদিত চা কারখানা চালু রয়েছে। ২০২৩ সালে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৯ টি নিবন্ধিত চা বাগান ,২০ অনিবন্ধিত চা বাগান রয়েছে। এর পাশাপাশি ৮ হাজার ৩৭১ টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান রয়েছে।এর মধ্যে নিবন্ধিত চা বাগান ২ হাজার ১৬৪ টি।


এতে চা চাষ হয়েছে ১২ হাজার ১৩২ দশমিক ১৮ একর জমিতে। এ সময় ওই চাষকৃত বাগান থেকে মোট ৮ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৪ কেজি চা পাতা উৎপাদিত হয়। এই কাঁচা চা পাতা থেকে চলমান ২৮ টি চা কারখানা থেকে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি চা উৎপাদিত হয়।যার মূল্য  দুইশত ৬০ কোটি টাকা।


তবে উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পঞ্চগড় জেলায় সবচেয়ে চা চাষ বেশি হয়ে আসছে। এ জেলার পাঁচটি উপজেলায় ১০ হাজার ২৬৭ দশমিক  ২৮ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে পঞ্চগড় সদরে ২ হাজার ১৭৯ দশমিক ৬৮ একর, তেতুঁলিয়ায় ৪ হাজার ৬৮৮ দশমিক ৩০ একর, বোদায় ৫৫০ দশমিক ০৫ একর, দেবীগঞ্জে  ৯৯৩ দশমিক ১০ একর ও আটোয়ারীতে ১ হাজার ৮৫৬ দশমিক ১৫ একর জমিতে এই চা চাষ হচ্ছে।


আরও পড়ুন: পলাশবাড়ীতে পলি মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ


অপরদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে মোট ১ হাজার ৪৫৭ দশমিক  ২৯ একর,দিনাজপুরে  ৮৯ একর লালমনিরহাটে ২৪৮ দশমিক ০২ একর ও নীলফারীতে ৭০ দশমিক ৫৯ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে ।বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় এর উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আমির হোসেন জানান . গত বছর সর্বশেষ জেলা প্রশাসন প্রতিকেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেটিও কার্যকর হয়নি।


এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, দামের চা পাতার দামের বিষয়টি চা বোর্ড জানে, তাদের একটি তত্বাবধায়ক কমিটি আছে ‘তারাই দাম নির্ধারণ করে। সেখানে জেলা প্রশাসনের কোন সদস্য নেই।


আরএক্স/