বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস সংকটের আশষ্কা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, ১৬ই মার্চ ২০২৪


বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস সংকটের আশষ্কা
ফাইল ছবি

গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা বহুগুণ বৃদ্ধি পায় প্রতিবছর। একই সময়ে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ায় বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। 


দেশে চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে, তবে পর্যাপ্ত জ্বালানির পাশাপাশি ডলার সংকট থাকায় লোডশেডিং ও গ্যাস সরবরাহে সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। 


চলমান গ্যাস সংকটের মধ্যে রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে একটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল। যার ফলে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করতে পারছেনা বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)। চলতি মাসের শেষের দিকে বন্ধ টার্মিনাল চালু হবে একই সাথে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু থাকলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল যেমন কয়লা ও গ্যাস আমদানি করতে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রার। চলমান ডলার সংকটে সেই কাজটিও মুখথুবড়ে পড়েছে। 


সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, পবিত্র রমজান ও চলমান  গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অনেকটা আবহাওয়া ও ডলারের উপর নির্ভর করবে। আবহাওয়া বেশি গরম হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি ও উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিল পরিশোধ করতে ডলার প্রয়োজন হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারলে চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে না।


আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে আরও একটি কূপে মিলল গ্যাসের সন্ধান


পবিত্র রমজান মাসে ইফতার, তারাবির নামাজ ও সেহেরির সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে একই সাথে গ্যাস সংকট প্রকট হওয়ার শষ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।


রমজানের আগে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ১০ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে। কিন্তু মার্চ ও এপ্রিল মাসে রমজান উপলক্ষে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।


বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট। ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। চলতি বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৫৪০ থেকে ১ হাজার ৭৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। যার মধ্যে পেট্রোবাংলার ১ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে হিমসিম খেতে হবে। এ ছাড়াও  ফার্নেল অয়েলের চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ টন এবং ডিজেলের চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার ৬০০ টন।  


আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, ব্যাখ্যায় যা জানাল জ্বালানি বিভাগ


বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হলে বাসাবাড়িসহ শিল্প ও অনান্য খাতে গ্যাস সংকট প্রকট রূপ ধারণ করবে। সারাদেশে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের সীমাবদ্ধতা এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কিছু এলাকায় সামান্য সময়ের জন্য বিদ্যুৎবিভ্রাট হচ্ছে। পাশাপাশি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। সিএনজি স্টেশন গুলোতেও গাড়ির লম্বা লাইন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিতরণ কোম্পানি বলছে মার্চ-জুলাই মাসে সাধারণত বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পবিত্র রমজান। 


পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন জানান, রমজানে দেশের মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সমস্যা হবে না। তবে বিতরণ লাইনের সীমাবদ্ধতা ও কারিগরি সমস্যার কারণে কিন্তু এলাকায় সাময়িক সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে।


জেবি/এসবি