প্রতিদিন মোবাইলে ৪ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা লেনদেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, ২১শে মার্চ ২০২৪
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় । এই অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন।
বুধবার (২০ মার্চ) মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ঈদে নতুন টাকা মিলবে ব্যাংকের যেসব শাখায়
বর্তমানে বিকাশ, নগদ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ নানা নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৯১ লাখ ৭৩ হাজার জন। গ্রাহক বেশি হওয়ার কারণ অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছে। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমের হিসাব খুলছে।
নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ৭১ লাখ ৮১ হাজার ও নারী ৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩২১। এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজেই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যানসিয়াল সার্ভিসের(এমএফএস) যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপর ‘নগদ’-এর অবস্থান।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এখন গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাকখাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলে দিনে দিনে নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে কমলো সোনার দাম
জানুয়ারি মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৪০ হাজার ২২৮ কোটি টাকা আর উত্তোলন হয়েছে ৩৭ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এসময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩৫ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগে একক মাসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ২০২৩ সালের জুনে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৫ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এছাড়া ৫৯৩ কোটি টাকার প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে।
জেবি/এজে