চাটুকারিতা নিয়ে যা বলছে ইসলাম


Janobani

ইসলাম ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬:৪০ অপরাহ্ন, ১৩ই মে ২০২৪


চাটুকারিতা নিয়ে যা বলছে ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামকে মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। জীবনের চলমান প্রতিটি বিষয়ে যদি ইসলামি বিধি-বিধান অনুসরণ করা যায় তাহলে জীবন হয়ে উঠবে সুখকর ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। ভাল কাজের প্রশংসা, অভিনন্দন-অভ্যর্থনা, বাহবা মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ জাগিয়ে তোলে; ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। কিন্তু বেশি প্রশংসা মানুষকে বিপদের মুখোমুখি করতে পারে। ব্যক্তিজীবনে অতিরিক্ত প্রশংসা করাকে ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। 


মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যারা স্বীয় কৃতকর্মে সন্তুষ্ট এবং তারা যা করেনি তার জন্য প্রশংসা প্রার্থী, এমন লোকদের সম্পর্কে ধারণা করো না যে তারা শাস্তিবিমুক্ত; বরং তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন শাস্তি।’ -(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৮)


কারো সামনে কিংবা পেছনে অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন প্রিয় নবি (সা.)। তিনি বলেন, ‘কারো সামনে তার প্রশংসা করা তার পিঠে ছুরি মারা বা তার গলা কেটে ফেলার সমান।’ -(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩৩৫)


আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়তেন বিশ্বনবী (সা.)


অন্য একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কেউ তোমাদের সামনাসামনি প্রশংসা করলে তার মুখে তোমরা পাথর ছুড়ে মারো।’ -(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস :  ৩৪০)


একদা এক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে অন্য এক সাহাবি সম্পর্কে বেশি বেশি প্রশংসা করেন, তা শুনে রাসুল (সা.) বললেন, ‘আফসোস, তুমি তো তোমার সঙ্গীর গর্দান কেটে ফেললে! কথাটি নবীজি (সা.) তিনবার বলেন। অতঃপর বললেন, যদি কারো প্রশংসা করতেই হয়, তাহলে সে যেন এভাবে বলে যে আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা পোষণ করি। কারণ তার প্রকৃত হিসাব মহান আল্লাহ জানেন। ’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত : ৪৮২৭)


আরও পড়ুন: আত্নহত্যাকারীর জানাজা পড়া যাবে কিনা, যা বলছে ইসলাম


আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন- 'দুর্বল ইমানের পরিচয় হলো, পার্থিব ধন-সম্পদের লোভে অন্যের অবাস্তব প্রশংসা করা বা তোষামোদ করা।' 

রাসুল (সা.) বলেছেন, উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোতে ভয় হয়, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাকপটু মুনাফিক। (মুসনাদে আহমদ : ১/২২)


তোষামোদের ক্ষতির দিকগুলো আলোচনা করতে গিয়ে হজরত ইমাম গাজ্জালি (রহ.) তার এক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, অতিরিক্ত প্রশংসা বা তোষামোদ বয়ে আনে পাঁচটি ক্ষতি। তন্মধ্যে তোষামোদকারী ব্যক্তি তিনটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় আর তোষামোদকৃত ব্যক্তি সম্মুখীন হয় দুটি ক্ষতির। 


তোষামোদকারী ব্যক্তি যে তিনটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তা হলো- এক. তোষামোদ করার মাধ্যমে তোষামোদকারী ব্যক্তি মূলত মিথ্যা ও প্রবঞ্চনার আশ্রয় নিয়ে থাকে। দুই. তোষামোদকারী ব্যক্তি তোষামোদের মাধ্যমে মুনাফেকি বা কপটতার শিকার হয়। তিন. অন্যকে গোনাহে লিপ্ত করার ক্ষতি। 


তাই ইসলাম মনে করে, তোষামোদ মূলত মানুষের যোগ্যতাকে নষ্ট করে। কারণ, মানুষ যখন যোগ্যতা প্রদর্শন ছাড়াই প্রশংসা ও স্তুতি শুনতে পায় তখন মেধা ও শ্রম ব্যয় করতে আগ্রহী হয় না। ফলে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকে। 


জেবি/আজুবা