যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের গোলাগুলি, নিহত ৩
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৫০ অপরাহ্ন, ১৯শে মে ২০২৪
বান্দরবানের রুমায় কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলিতে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ৩ অস্ত্রধারীর সন্ত্রাসী নিহত ও সন্ত্রাসীদের আস্তানা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ সরঞ্জাম উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৯ মে) সকালে রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, জেলার রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাসনাল ফ্রন্ট (কেএনএফের) আস্তানায় অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। এসময় কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। থেমে থেমে কয়েকদফায় গোলাগুলির ঘটনায় কেএনএফের ৩ সশস্ত্র সদস্য নিহত হয়। তাদের মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক এবং আরেকজন আহত হওয়ার কিছু সময় পর মারা যান।
আরও পড়ুন: ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শাপলুর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
তবে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা রুমা সদরে নিয়ে আসতেছে বলে জানাগেছে। এদিকে গোলাগুলিতে তিন জনের মৃত্যুর পর কেএনএফের সশস্ত্র সংগঠনের অন্যসদস্যরা আস্তানা ছেড়ে পাহাড়ের গহীন অরণ্যে পালিয়ে যায়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক যৌথ বাহিনীর দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ (কুকি চিন ন্যাসনাল ফ্রন্ট) যৌথ বাহিনীর সাড়াশি অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। কৌশলে অভিযানের জাল বিছিয়ে কেএনএফের অস্ত্রধারীদের রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ঘিরে ফেলেছে। রনিনপাড়া থেকে আট কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের খাদে ডেবাছড়া ঝিরি এলাকার খাদে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত হয়েছে।
গোলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, রুমা-রোয়াংছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির খবর পেয়েছি। গুলিতে কয়েকজন হতাহতের কথা শোনা গেলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মরদেহ পুলিশ পায়নি। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের টিম ফিরে আসলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় আনারস প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন
এ প্রসঙ্গে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আতিকুর রহমান জানান, যৌথ অভিযানে কেএনএফের ৩ সদস্য নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল রোয়াংছড়ি- রুমা সীমান্তবর্তী ডেবাছড়া ঝিরি। অভিযানে রুমা সেনা জোনের সদস্যরা অংশ নিয়েছে। অভিযান থেকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ফিরলে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৭ মে) রুমা উপজেলার দূর্গম দার্জিলিং পাড়ায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফের ১ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়। এর়আগে গত২৮ এপ্রিল রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের জঙ্গলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের গোলাগুলিতে ২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছিল। তারআগে গত ২২ এপ্রিল রুমা উপজেলার দুর্গম মুনলাই পাড়ায় সেনাবাহিনী সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফের ১ জন সশস্ত্র সদস্যের মারা যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণে অস্ত্র-গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গত ২ ও ৩ মে রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট, ব্যাংকের অর্থ ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত নয়টি মামলা হয়েছে। তারমধ্যে থানচিতে ৪টি ও রুমায় ৫টি মামলায় ৮৬ জনকে কেএনএফের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ জন নারী রয়েছে।
এমএল/