আত্মসমর্পনকারি আমিনের পারিবারিক ইয়াবা সিন্ডিকেট এবার র্যাবের জালে
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:২৫ অপরাহ্ন, ২০শে মে ২০২৪
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার ডেইল পাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবদুল আমিন (৪০)। গত ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাসে টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণকারি ১০২ জন ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে একজন। ওইদিন বড় ভাই নুরুল আমিন সহ আবদুল আমিন আত্মসমর্পন করেছিলেন।
ওইদিন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারিদের সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০ টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে ২ টি মামলা দায়ের করেছিলেন। ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর আদালত এই ২ টি মামলার রায় প্রদান করে। যেখানে মাদক মামলায় প্রত্যককে ১ বছর ৬ মাসের কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করে। একই সঙ্গে অস্ত্র মামলায় সকলকে খালাসের আদেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু এ মামলার আসামিরা হাজতবাস সাজার অধিক হওয়ায় নতুন করে সাজা ভোগ করতে হয়নি। ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েই খালাস পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: টেকনাফের অপহরণ চক্রের প্রধান মোর্শেদ অস্ত্রসহ গ্রেফতার
এরপরও জীবন বদলাতে পারেননি আবদুল আমিন। লঘু সাজার খালাসের পর পারিবারিকভাবেই ইয়াবা সিন্ডিকেট করে পরিচালনা করে আসছিল মাদক কারবার। এবার সেই আবদুল আমিন সহ পারিবারিক সিন্ডিকেটের ৪ সদস্যকে ৭ লাখ ইয়াবার চালান সহ আটক করেছে র্যাব-১৫।
রবিবার দিবাগত রাত আড়াই টায় কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার চেংছড়ি পাটুয়ারটেক সৈকত সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫ এর উপ অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান।
অভিযান আটক আবদুল আমিন ছাড়া অপর ৩ জন হলেন, আবদুল আমিনের ভাগিনা টেকনাফের গোদার বিল এলাকার আবু সৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩৫), আবদুল আমিনের ভাগ্নি জামাই ও আবদুল্লাহর ভগ্নিপতি গোদার বিলের মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে নুরুল আবসার (২৮), সহযোগি ডেইলপাড়ার মৃত দীল মোহাম্মদের ছেলে জাফর আলম (২৬)।
সোমবার (২০ মে) দুপুরের কক্সবাজারস্থ র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান জানিয়েছেন, মাদকের একটি চিালান নিয়ে একটি বিলাস বহুল প্রাইভেটকার যোগে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহরের আসছে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব মেরিন ড্রাইভে অস্থায়ী চেকপোষ্ট স্থাপন করে। এক পর্যায়ে একটি কালো রং এর বিলাস বহুল প্রাইভেটকার আসলে থামার সংকেত দিলে তা অমান্য করে দ্রæত গতিতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। র্যাবের আভিযানিক দল কারটি থামাতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গাড়ি তল্লাশী করে ৭ ইয়াবা পাওয়া যায়। আটক করা হয় ৪ জনকে। একই সঙ্গে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত কারটি জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে জোড়া খুন, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আবদুল আমিন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং এই সিন্ডিকেটটির প্রধান। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ ১১টির অধিক মামলা রয়েছে। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবদুল আমিনের ভাগিনা। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২টি মামলা রয়েছে। নুরুল আবসার সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র ভগ্নিপতি। তার বিরুদ্ধে মাদকের সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে। জাফর আলম এই সিন্ডিকেটের তথ্য সরবরাহকারী।
মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান জানিয়েছেন, গরু ব্যবসার আড়ালেই এই সিন্ডিকেট পরিচালিত হচ্ছে। এব্যাপারে মামলা করে আটকদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
জেবি/এজে