প্রেমের টানে টাঙ্গাইলের তরুণীর কাছে নোয়াখালীর তরুণী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


প্রেমের টানে টাঙ্গাইলের তরুণীর কাছে নোয়াখালীর তরুণী

টাঙ্গাইলের এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় নোয়াখালীর এক তরুণীর। সেখান থেকেই তাদের প্রেম। প্রেমের টানে সোমবার দুপুরে নোয়াখালী থেকে টাঙ্গাইল চলে এসেছেন সেই তরুণী।

ওই তরুণী জানান, ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয়। এরপর দুই বছর হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন। জড়িয়ে পড়েন প্রেমে। অবশেষে প্রেমের টানে দূরপথ পেরিয়ে তিনি সংসার করতে চলে এসেছে টাঙ্গাইল।

পরিবার মেনে না নিলে প্রয়োজনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করে জীবন চালাতেও প্রস্তুত তারা। বিষয়টি নিয়ে বাসাইল উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কিশোরীর পরিবার পড়েছেন বিপাকে।

স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুইজন প্রায় দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচিত হয়। সেই থেকেই ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের টানে তারা প্রায় দুই মাস আগে ঢাকার সাভারে এক আত্মীয়ের বাসায় রাত্রিযাপনও করেন। এরপর সেখান থেকে আনোয়ার নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তারা সিরাজগঞ্জের চৌহালী গিয়ে রাত কাটায়। সেখানে স্থানীয়দের দুই কিশোরীর আচরণ সন্দেহজনক হলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দুই পরিবারের কাছে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ রবিবার (২০ মার্চ) তাদের দুই জনের ফোনে কথা হয়। এরপর সন্ধ্যায় নোয়াখালীর তরুণী টাঙ্গাইল শহরে চলে আসে। পরে বাসাইল থেকে গিয়ে তাকে নিয়ে আসে ওই স্কুলছাত্রী। ওই রাতেই তাদের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তাদের দেখতে দলে দলে লোকজন বাড়িতে ভিড় জমান।

নোয়াখালীর ওই তরুণী বলেন, ‘আমি ওকে ভালোবাসি, তাই চলে এসেছি। আমি আমার ফ্যামিলিকে বলেছিলাম, ওর কাছে যাব, কিন্তু উনারা রাজি হয়নি। তারা আমাদের সম্পর্ক মানবে না, তাই বাড়ি থেকে নিরুপায় হয়ে পালিয়ে এসেছি। এখন ওর পরিবার না মানলে আমরা দুজনে অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করব।’

টাঙ্গাইলের ওই নবম শ্রেণির ছাত্রী বলেন, ‘ওকে নিয়ে আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম। আমরা ঢাকায় দেখা করেছি। ঢাকায় আমাদের ফ্যামিলি গিয়ে আমাদের আলাদা করে নিয়ে এসেছে। আমার ফোন নিয়ে নিয়েছিল। কয়েক দিন পর ফোন ফেরত দেয়। তখন আবার আমরা কন্ট্যাক্ট করে ওকে আমার বাসায় নিয়ে এসেছি।

‘সামাজিকভাবে আমাদের মানবে না, কিন্তু আমি ওর সঙ্গেই থাকতে চাই। বাঁচলেও ওর সঙ্গে, মরলেও ওর সঙ্গে। পুলিশ বা তারা যদি আমাদের মেরে ফেলতে চায়, তাহলে দুজনকে একসঙ্গেই মারবে। আর যদি বাঁচিয়ে রাখতে চায়, তাহলে দুজনকেই রাখতে হবে।’

এদিকে দুই নারীর প্রেম বিস্মিত করছে স্থানীয়দের। সিয়াম নামে স্থানীয় একজন বলেন, ‘জীবনের প্রথম এই রকম ঘটনা দেখলাম। এ রকম কোনো দিন দেখি নাই। বিষয়টি দেখে খুব অবাক হলাম।’

৭০ বছর বয়সী আঙ্গুর বলেন, ‘মেয়ে-মেয়ে সম্পর্ক কোনো দিন দেখি নাই। একজন আরেকজনকে ছাড়া বাঁচবে না। বিষয়টি আসলে রহস্যজনক।’

জানতে চাইলে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে নোয়াখালীতে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। মেয়েটির প্রকৃত অভিভাবকের খুঁজে পেলে তাদের হাতে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেবো। আর তার পরিবার খুঁজে না পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

ওআ/