যত্ন কার্ডের উৎকোচের টাকা ফেরতে লাঞ্ছিত গর্ভবতী, উদ্ধারে রক্তাক্ত বিদেশগামী যুবক
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যত্ন (শিশু ভাতা) কার্ড করার জন্য দেয়া উৎকোচের টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন গর্ভবতী বেবী বেগম (৪০)। এ ঘটনায় ওই নারীকে উদ্ধার করতে গেলে রক্তাক্ত জখম হয়েছেন প্রবাসগামী যুবক রফিক (২২)। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকেই গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের দুবলাগাড়ী গ্রামে। এ ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার ছয় মাসের অন্তসত্ত্বা বেবী বেগম দুবলাগাড়ী গ্রামের মিনাজুলের স্ত্রী এবং রক্তাক্ত জখমী রফিক একই গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে নির্যাতিত বেবী বেগম জানান, বিগত কয়েকমাস আগে যত্ন (শিশু ভাতা) কার্ড করে দেওয়ার জন্য দুবলাগাড়ী গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলামকে (৩৬) ছয় হাজার টাকা দেন গর্ভবতী বেবী। কাগজপত্র জমা হয়েছে এখন কার্ড আসবে বলে তালবাহনা করতে থাকলে বেবী টাকা ফেরতের চাপ দেয়। এক পর্যায়ে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে কামরুলের বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে কামরুলের মা কোহিনুর বেওয়া ও স্ত্রী কোহিনুর বেগম বেবীকে বেধরক মারপিট করে। এসময় সে দৌড়ে বাড়ি ফেরার পথে পিছু ধাওয়া করে আবারো কামরুল ও তার দুই ভাই মিলে বেবিকে মারপিট করতে থাকে। এ ঘটনায় বেবীকে উদ্ধারে প্রতিবেশি রফিক সহ বেশ কয়েকজন এগিয়ে আসলে কামরুল তার দুই ভাই সবুজ (২২) ও সাদ্দামের (২৮) সহযোগিতায় রফিকের মাথায় ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে রফিক লুটিয়ে পড়লে অন্য প্রতিবেশিরা তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যায় গোবিন্দগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
এ ঘটনায় রফিক জানান, বেবী বেগমকে মারপিটের ঘটনায় এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে রাগান্বিত হয়ে কামরুল ও তার ভাইয়েরা আমাকেও মারপিট করে। এসময় পিছন থেকে কেউ একজন ধারালো কিছু দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করলে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমি বিদেশগামী (সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন) একজন যুবক। প্রতিবেশিদের ঝামেলা মেটানোর চেষ্টাই আমার ভুল হয়েছে।
এদিকে বেবি ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে হাসপাতালে কথা বললে তারা জানান, কামরুল ও তার ভাইয়েরা দুর্দান্ত প্রকৃতির লোক। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।