ঈদের নামাজের আগে কোরবানি দেয়া যাবে কি?
ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬:২০ অপরাহ্ন, ৬ই জুন ২০২৪
আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় নির্ধারিত দিনে ব্যক্তির পশু জবাই করা হলো- কোরবানি। শুধু আত্মত্যাগই নয় বরং আল্লাহর সঙ্গে বান্দার ভালোবাসার অনন্য এক নিদর্শনও কোরবানি। প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।
প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন মুসলিম ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তার জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব বা আবশ্যক। অর্থাৎ, কেউ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এর সমপরিমাণ নগদ টাকা কিংবা সম্পদের মালিক হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তার কুরবানি করা আবশ্যক।
কোরবানি করতে হবে ঈদুল আজহার নামাজের পরে। কেউ ঈদের আগে কোরবানি করলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। কেননা, রাসুল (স.) ঈদের নামাজের পরে কোরবানি করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (স.) আমাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা, এরপর কোরবানি করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরিকামতো হবে। আর যে আগেই জবেহ করেছে, তা পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত, কোরবানি নয়। (সহিহ বুখারি: ৯৬৮; সহিহ মুসলিম: ১৯৬১; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৯০৭)
এমনকি কোরবানির ঈদে নামাজ শুরুর আগে নবীজি কিছু খেতেন না। হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না; আর ঈদুল আজহার দিন নামাজ না পড়ে কিছু খেতেন না। (জামে তিরমিজি: ৫৪২)
বৃষ্টিবাদল বা অন্যকোনো ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয়, তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেই কোরবানি করা জায়েজ’। (সহি বুখারি: ২/৮৩২, কাজিখান: ৩/৩৪৪, আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৮)
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের সময় মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন
জিলহজ ‘১০, ১১ ও ১২- এই তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন কোরবানি করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, তারপর তৃতীয় দিন।’ (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৬)
রাতেও কোরবানি করা জায়েজ। তবে তা শুধু জিলহজের ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে করতে হবে। ১২ তারিখ দিবাগত রাতে এবং ঈদের আগের রাতেও কোরবানি করা যাবে না। কেননা ওই সময়গুলো কোরবানির সময়ের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সুতরাং ১০ ও ১১ তারিখ রাতে কোরবানি করতে নিষেধ নেই। তবে আলোস্বল্পতার কারণে জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই। (তথ্যসূত্র: ফতোয়ায়ে খানিয়া: ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩২০, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/২৯৬, আহসানুল ফতোয়া: ৭/৫১০)
জেবি/আজুবা