আনার হত্যায় এবার আওয়ামী লীগ নেতা আটক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:২৭ অপরাহ্ন, ৭ই জুন ২০২৪


আনার হত্যায় এবার আওয়ামী লীগ নেতা আটক
ছবি: প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে আটক করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) পুলিশ।


বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে ঝিনাইদহ সদরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে ঢাকার ডিএমপির ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে আটক করেন।


আটক গ্যাস বাবু ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।


তবে স্থানীয়দের দাবি, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার অন্যতম হোতা শিমুল ভূঁইয়ার নিকট আত্মীয় কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু। আনার হত্যার ঘটনায় তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: চিকিৎসার নামে স্ত্রীর সম্ভ্রমহানি, প্রতিশোধ নিতে কবিরাজকে হত্যা


ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহীন উদ্দিন জানান, রাতে ডিএমপি থেকে ডিবি পুলিশ ঝিনাইদহে এসেছিলেন। তারা গ্যাস বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে গেছে। তবে কী মামলায় বা কোন ব্যাপারে নিয়ে গেছে তা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।


প্রসঙ্গত, গত ১২ মে পরিবারকে চিকিৎসার কথা বলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদের বর্ডার হয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাসায়। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ এমপি।


প্রায় ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বুধবার ২২ মে আনার হত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা কসাই জিহাদ হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি জানতে পারে, এমপি আনারের মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে কলকাতার ভাঙ্গড় এলাকার কৃষ্ণমাটি ও জিরানগছা খালের মধ্যে।


এ তথ্যের আলোকে কৃষ্ণমাটি ও জিরানগাছার বাগজোলা কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের খালের পানিতে নামানো হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয় তদন্তকারী কর্মকর্তাদের। নিজেদের কাছে থাকা সব ধরনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেও মরদেহের টুকরো উদ্ধার করতে পারেনি তারা।


আরও পড়ুন: এমপি আনারকে হত্যা, কালীগঞ্জজুড়ে কান্নার রোল


এরই মধ্যে আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশে গ্রেফতার তিন আসামি, এরা হলেন শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারই আলোকে হত্যা-রহস্য উদঘাটন ও ভারতের তদন্ত দলকে সহায়তার জন্য ২৬ মে প্রতিনিধি দল নিয়ে কলকাতায় যান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সেখানে অবস্থানকালে তিনি কলকাতা সিআইডিকে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া বাড়ির সুয়ারেজ লাইন, কমোড ও সেপটিক ট্যাংক ভেঙে দেহাংশের সন্ধান করতে অনুরোধ করেন।


হারুন অর রশীদের অনুরোধে ২৮ মে বিকেলে কলকাতা পুলিশ ভবনটির স্যুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংকে দেহাংশের খোঁজে অভিযান পরিচালনা করেন। সেদিনই সঞ্জীবা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়, সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে বেশকিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করা সম্ভব হয়।


তবে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরোগুলো সংসদ সদস্য আনারের কি না তা এখনো নিশ্চিত নয় তদন্তকারী দল। নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যদি ফরেনসিক টেস্টে প্রমাণ হয় যে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরোগুলো মানুষের, তাহলে সেগুলো এমপি আনারের কি না তা জানার জন্য তার মেয়ে কিংবা ভাইকে ডিএনএ টেস্টের জন্য কলকাতায় ডাকা হতে পারে।


এমএল/