কোটা সংস্কার আন্দোলন
ইবি শিক্ষার্থীদের ২ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৩০ অপরাহ্ন, ৭ই জুলাই ২০২৪
সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পনর্বহাল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সকল চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে প্রায় দুইঘন্টা কুষ্টিয়া- ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে দুর্ভোগে পড়েন এই সড়কের অধিক যাত্রী।
বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার(৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখেন তারা। তবে এসময় জরুরী সেবাকারী যানবাহনগুলো ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবারও মহাসড়ক অবরোধ ইবি শিক্ষার্থীদের
এর আগে এদিন বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল প্রাঙ্গণে জড়ো হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমবেত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদেরকে আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ইবিতে কোটা সংস্কার বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী-মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন
এসময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওয়ানা শামিম বলেন, আমরা দেখে আসছি যখনি জনগণ বৈষম্যের স্বীকার হয় তখনি জনগণ বিভিন্ন এক্টিভিজমের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ করে। আমরা বর্তমানে সেই বৈষম্যের প্রতিবাদ করছি। সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে যে সরকার চাইলে অনগ্রসর গেষ্ঠীর জন্য কোটার ব্যবস্থা করতে পারেন।
সেই অর্থে যে গোষ্ঠীকে কোটার আওয়তায় আনা হচ্ছে তারা কি আসলেই অনগ্রসর কি না? আমি একজন নারী হয়ে যেখানে বলতে পারছি নারীরা অনগ্রসর না সেখানে সেই গোষ্ঠী কিভাবে বলতে পারে তারা অনগ্রসর? অনগ্রসর বলতে বুঝায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা মূল স্রোতের বাইরে থাকে।
আমরা তাদেরকে স্পেশাল সুবিধা দিয়ে থাকি। আমাদের যে বন্ধুটার মা- বাবা কৃষক, শ্রমিক, দিন মজুর তারা কি অনগ্রসর গোষ্ঠী নয়? আমাকে নারী কোটা দেয়া হয়েছে। অগ্রসর হিসেবে কিন্তু আমি এমন বৈষম্য চাই না।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আইরিন সুলতানা বলেন, আমরা নারী হয়েও নারী কোটা চাচ্ছি না। তাহলে সেই ৫৩ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতী- নাতনীরা কেনো কোটার সুবিধা ভোগ করবে? আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করছি না।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতি ও অবস্থানের মধ্য দিয়ে ইবি শিক্ষকদের ৩ দিনের কর্মসূচি শুরু
তাদের অবদান দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে এই ৩০% কোটা বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিরুল কবির সৌরভ বলেন, আমাদের একটাই দাবি কোটা সংস্কার, আমরা কিন্তু বাতিলের কথা বলিনি। যৌক্তিক কোটা সংস্কারের মাধ্যমে মেধাবীদেরকে প্রধান্য দেওয়া হলে কিন্তু বিভিন্ন সরকারি অফিসে আদালত থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যায়ে লালফিতার দৌরাত্ম্য হ্রাস পাবে।
এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার যে পরিকল্পনা সেটা মেধাবীদের দ্বারা পূরণ করা সম্ভব। যদি সরকার দাবি মেনে না নেয় তাহলে শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।
এসডি/