আবেদ আলী কোনো চেয়ারম্যানেরই গাড়িচালক ছিলেন না: দাবি পিএসসির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৯ অপরাহ্ন, ১০ই জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে গ্রেফতার হওয়া আবেদ আলী কখনোই পিএসসির কোনো চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। তিনি চাকরি জীবনে ৩ জন সদস্য এবং একজন যুগ্মসচিবের গাড়ির চালক ছিলেন বলে দাবি করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
বুধবার (১০ জুলাই) পিএসসির প্রশাসন শাখা থেকে তথ্য আকারে বিষয়টি দেয়া হয়েছে। তার একটি কপি সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে। যদিও এটি পিএসসির আনুষ্ঠানিক কোনো বিজ্ঞপ্তি বা বিবৃতি নয় বলে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। তবে আবেদ আলী সাবেক ৩ জন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পিএসসির দেয়া তথ্যাঅনুসারে- চাকরিজীবনে আবেদ আলী গাড়ি চালিয়েছেন পিএসসির সদস্য মজিবুর রহমান বিশ্বাস, মোজাম্মেল হক ও মোহাম্মদ হোসেন সেরনিয়াবাতের। এছাড়া একজন যুগ্মসচিবের গাড়ির চালক ছিলেন তিনি। তবে সেই যুগ্মসচিবের নাম জানায়নি পিএসসি।
কমিশনের দেয়া ওই তালিকা অনুসারে, অধ্যাপক ড. মো. মুস্তফা চৌধুরী ১৯৯৮-২০০২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার গাড়িচালক ছিলেন আলমগীর হোসেন। ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে থাকা অধ্যাপক ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়িচালকও ছিলেন আলমগীর হোসেন।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁস: আবেদপুত্র সিয়ামসহ ১০ আসামি কারাগারে
এর পর ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. সা’দত হুসাইন। তার সময়েও আলমগীর হোসেনই গাড়িচালক ছিলেন। তারপর নিয়োগ পাওয়া ইকরাম আহমেদের গাড়িচালক ছিলেন আবু বক্কর সিদ্দিক। এরপরের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের গাড়িচালক ছিলেন মোট তিনজন। তারা হলেন- আবু বক্কর সিদ্দিক, শহিদ, অনুত্তর চাকমা। আর পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনের গাড়িচালক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন অনুত্তর চাকমা।
অপরদিকে, চাকরিচ্যুত গাড়িচালক আবেদ আলীকে “চেনেন” ও তাকে চাকরিচ্যুত করতে “অনেক বেগ পোহাতে” হয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন পিএসসির ১২তম চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। পিএসসির সাবেক এ চেয়ারম্যান বর্তমানে সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
তবে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাতে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যোগদানের পরই আমি আবেদ আলীর নানা অনিয়ম ও প্রভাবের কথা শুনেছিলাম। অনেক কর্মকর্তাও নাকি তার সঙ্গে সখ্য বজায় রেখে চলতেন। আবেদকে অপকর্মের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার পর, তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করার জন্য যে কমিটি হয়েছিল, তাদেরও অনেক বেগ পোহাতে হয়েছিল।”
আরও পড়ুন: কুয়াকাটাতে হোটেলের শেয়ার নিয়ে সৈয়দ আবেদ আলীর প্রতারণার ফাঁদ
মোহাম্মদ সাদিকের ভাষ্যমতে, “ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ও এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী যখন পিএসসি চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন আবেদ পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ইকরাম আহমদ যখন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন, তখন আবেদ ধরা পড়েন ও সাময়িক বরখাস্ত হন। পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।”
তবে ড. সাদিকের ভাষ্যে, যে ৩ জন চেয়ারম্যানের কথা উঠে আসে, তাদের মধ্যে সাবেক দুজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে হলে তারা আবেদ আলীকে চেনেন না বলে দাবি করেন।
তাদের মধ্যে পিএসসির ১০ম চেয়ারম্যান সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী বলেন, “আবেদ আলী নামে কেউ আমার সময়ে চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। আমি তার সম্পর্কে কিছুই জানি না, বলতেও পারছি না।”
আর গত ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর পিএসসির চেয়ারম্যান নিয়োগ পান ইকরাম আহমেদ। তিনি বলেন, “যতদিন আমি পিএসসিতে ছিলাম, তখন আবেদ আলী নামে কেউ আমার গাড়িচালক ছিলেন না। ব্যক্তিগতভাবে আমি আবেদ আলীকে চিনি না।”
জেবি/এসবি