Logo

নালার উপর সরকারি গণগ্রন্থাগার, রাস্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতি

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৫ জুলাই, ২০২৪, ০৫:২২
33Shares
নালার উপর সরকারি গণগ্রন্থাগার, রাস্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতি
ছবি: সংগৃহীত

আর ওই রাস্তাটিও পৌরসভার অর্থায়নের তৈরি

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার শহরের পানি নিষ্কাশনের যে কয়েকটি নালা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান নালাটি শহরের শহীদ সরণীর পশ্চিমে। যে নালাটির শুরুর অংশ রয়েছে পৌরসভার ৩ টি ওয়ার্ড জুড়ে। এটি একদিকের শুরু অংশ পর্যটন জোন কলাতলী, একই সঙ্গে মোহাজেরপাড়া, হাসপাতাল সড়ক, স্টেডিয়াম পাড়া, ঘোনারপাড়াও। এটি শহরের সার্কিট হাউস, বাহারছাড়া এলাকা থেকে মিশে গেছে খাদ্যগুদাম সংলগ্ন এলাকা হয়ে বাঁকখালী নদীতে।

কিন্তু এই নালাটির উপরেই বাহারছড়ার অংশে তৈরি হয়েছে কক্সবাজার সরকারি গণগ্রন্থাগার ভবন। যে ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে ২৩ বছর আগে ২০০০ সালে। এই ভবনটির নিচেই রয়েছে নালাটি। তার কাছা-কাছি এলাকায় নালার অংশ দখল করে রয়েছে ৫ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৭-৮টি বসত ঘরের অংশ। আর খাদ্যগুদাম সংলগ্ন এলাকা হয়ে বাঁকখালী নদী মিশে যাওয়ার অংশটিতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি। এই নালার উপর দিয়ে খাদ্যগুদামের গেইটে তৈরি করা হয়েছে অনুমানিক ২০ ফুটে দৈঘ্যের একটি কালর্ভাট। ওই কালর্ভাটটির নিচে দক্ষিণে দেখা গেছে নালাটি অনুমানিক ২০ ফুটে। কিন্তু কালভার্টের উত্তরে এসেই তা হয়ে গেছে অর্ধেক বা ১০ ফুট। ওই অংশের পশ্চিমে তৈরি হয়েছে একটি রাস্তা আর অসংখ্য বসত ঘর। আর ওই রাস্তাটিও পৌরসভার অর্থায়নের তৈরি।

বিজ্ঞাপন

রবিবার (১৪ জুলাই) বেলা ১২ টায় কক্সবাজারের নালার সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদে মাঠে নামে কক্সবাজার পৌর পরিষদ। পৌর মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে দুপুর ২ টা পর্যন্ত টানা অভিযানটি ছিল এই গুরুত্বপূর্ণ নালাটি ঘীরে।

বিজ্ঞাপন

গত বুধবার (১০ জুলাই) রাত থেকে কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। আর শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল ওই বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ভোর থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৩০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলাজুড়ে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। শহরের প্রধান সড়ক, উপসড়ক তলিয়ে বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে পানি। যে জলাবদ্ধতা আগে দেখেনি শহরবাসি। ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন শহরবাসী।

বিজ্ঞাপন

এর প্রিক্ষিতে শনিবার বিকালে কক্সবাজার পৌরসভা কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভার পর পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জলাবদ্ধতা নিরসনে রবিবার থেকে নালার অবস্থান নির্ধারণ, দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে কক্সবাজার পৌর পরিষদ।  

বিজ্ঞাপন

ঘোষণা মতেই রবিবার বেলা ১২ টায় মাঠে নামে পৌর মেয়র মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিষদ। মাঠে নেমে পৌর পরিষদ প্রথমে যান শহীদ সরণীর পশ্চিমে বাহারছড়ার নালাটি দেখতে। ওখানে গিয়ে দেখা মিলে কক্সবাজার সরকারি গণগ্রন্থাগার ভবনের নিচেরই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি অংশ বিশেষ ভেঙ্গে দেয়া শুরু করেছেন পৌর পরিষদ। ওখানেই বাঁধা হয়ে বসেন গণগ্রন্থাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঋষিকেশ পাল।

তিনি পৌর মেয়রকে অবহিত করেন এটি সরকারি ভবন এবং এটির কোন অংশ ভাঙ্গা যাবে না। পৌর মেয়র বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে এই কর্মকর্তা ফোনে বিষয়টি নানাজনকে অবহিত করেন। যার কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলে আসেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুর আলম। এনডিসি এসেই কথা বলেন পৌর মেয়রের সাথে। নালার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে তিন দিনের সময় চেয়ে উচ্ছেদ বন্ধ রাখার কথা বললে ওখানেই বন্ধ হয়ে যায় ভাঙ্গার কাজটি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ঘটনাস্থলে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুর আলম জানান, জেলা প্রশাসক বিষয়টি দেখতে তাকে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি তিনি ফিরে জেলা প্রশাসককে অবহিত করবেন এবং জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত দেবেন।

এরপর উচ্ছেদ দলটি বাহারছাড়া অংশে থাকা ৫ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৭-৮টি বসত ঘরের অংশ বিশেষ ভেঙ্গে দেন এবং কয়েকজনকে দ্রুত দখল ছাড়তে নিদের্শ দেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর দলটি যান খাদ্যগুদাম সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর অংশে। ওখানেও কয়েকটি বসতি উচ্ছেদ করে অন্যান্যদের দ্রুত সরে যাওয়ার নিদের্শ দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই সময় পৌর মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানান, কাগজপত্রে এই গুরুত্বপূর্ণ নালাটি ৬০ ফুটের বেশি। কিন্তু এটি দখল হয়েছে ক্রমাগত ১০-১৫ ফুটে চলে এসেছে। এসব দখল উচ্ছেদ করে নালাকে আগের অবস্থায় ফিরে নেয়া হবে। এতে কোন প্রকার বাঁধা মানা হবে না। আপাততে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সময় চেয়েছেন। তাদের ৩ দিনের সময় দেয়া হল। ৩ দিন পর আবারও একই অংশে অভিযান পরিচালিত হবে। এখানে পৌরসভার অর্থে কিছু হলে তাও উচ্ছেদ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

মেয়র বলেন, কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোট ৫ টি নালা। এই নালা দখলকারি হিসেবে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে গত কয়েক বছর আগে একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। যে তালিকা তৈরির কাজে সিনিয়র সাংবাদিক জেলা বিশিষ্টজনরা ছিলেন। ওই তালিকাটি ধরেই অভিযান শুরু হয়েছে। নালা আগের অবস্থানে না ফেরা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে বিকালে কক্সবাজার শহরের পেশকার পাড়া ও কলাতলী এলাকায় পৃথকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। ওখানেও কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদের তথ্য জানিয়েছে পৌর পরিষদ।

এমএল/ 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD