ডিপিডিসি’র দুর্নীতির হোতা
প্রকৌশলী হাদী ছিলেন শিবির নেতা!
বশির হোসেন খান
প্রকাশ: ০৩:০১ অপরাহ্ন, ১লা আগস্ট ২০২৪
ঢাকা পাওয়ার ড্রিস্টিবিউশন কোম্পানী (ডিপিডিসি) লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাজিবুল হাদী (আইডি ১১০৯০) নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি ভোল পাল্টিয়ে এখন আওয়ামী লীগের তোকমা লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয় দুদকে একটি অভিযোগ পত্র থেকে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ২০০৮ সালের ৭ জুলাই ডিপিডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান হাদী। চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। গ্রাহক হয়রানী করে কালো টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। এই টাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন দেশ। হাদীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ম্যানেজ করে ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকেন তিনি। কি করেন না তিনি। তার অবৈধ কাজে কেউ বাধা হয়ে দাড়ালেই তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, ষড়যন্ত্রে ফেলেন। বিভিন্ন সময়ে তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ মিললেও কোনো না কোনোভাবে পার পেয়ে যাচ্ছেন ডিপিডিসির এই কর্মকর্তা। প্রকৌশলী হাদীর খুটির জোঁড় কোথায়? এই প্রশ্ন এখন চাপা ক্ষোভে রূপ নিয়েছে প্রকৌশলীদের মনে। এদিকে তাকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
সূত্রে জানা গেছে, রাজিবুল হাদী বর্তমানে ‘ডিপিডিসি এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন। হাদী যেখানেই যান, গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। এখানেও ব্যতিক্রম হয়নি। দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে অর্থের লোভে চীনাদের হয়ে কাজ করেন। যোগ্য ঠিকাদারের পরিবর্তে অযোগ্য ঠিকাদারের সঙ্গে মিলে কাজ করেন। এজন্য কমিশন হিসেবে বিপুল টাকা নেন তিনি।
জিটুজি’র মতো স্পর্শকাতর এবং ড্রিম প্রকল্পে দুর্নীতিবাজদের পদায়ন করা নিয়ে এখন জোড়ালো প্রশ্ন উঠছে প্রকৌশল সমাজে। তারা প্রকল্পের কাজের গুনগত মান, দেশের টাকা সাশ্রয়ের বিষয়েও প্রশ্ন তুলছেন। প্রকৌশলীরা বলছেন, ডিপিডিসিতে যোগ্য প্রকৌশলীদের জিটুজি প্রকল্পে পদায়ন না করাতে ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের কাজের গুনগত মান, টেকসই হবে না। এই প্রকল্পে গুটিকয়েক দুর্নীতি পরায়ন প্রকৌশলীর কারণে কাজের ব্যয় আরও অনেক বেড়ে যাবে। ব্যয় বেড়ে গেলে তা রাষ্ট্রের জনগণের অতিরিক্ত করের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য এই প্রতিবেদক একাধিক বার প্রকৌশলী মো: রাজিবুল হাদীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেন না এবং তার দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকল্প অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ডিপিডিসি’র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান দৈনিক জনবানীকে বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো। দুর্নীতিবাজ যে হউক কোনো ছাড় নয়।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগের উপ সচিব এবং ডিপিডিসি’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এরাদুল হক বলেন, দুর্নীতি হলেই ব্যবস্থা। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এ ব্যাপারে ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোরশেদুল আলম খান বলেন, অল্প সময় হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করেছি। এখনো সবার সম্পর্কে তেমন জানি না। তিনি বলেন, দুর্নীতি হলে অবশ্যই অ্যাকশনে যাবো।
জেবি/এসবি