শিক্ষার্থীদের চোখে আগামীর ঢাকা কলেজ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:২৪ অপরাহ্ন, ১৯শে আগস্ট ২০২৪


শিক্ষার্থীদের চোখে আগামীর ঢাকা কলেজ
ছবি: প্রতিনিধি

দীর্ঘ একমাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শত শত শিক্ষার্থীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন বাংলাদেশ। শিক্ষার্থীদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়েই দেশ আজকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তাই প্রতিটা শিক্ষার্থীর প্রত্যাশা তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস যেনো স্বপ্নের মতো সুন্দর এবং সুগঠিত হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


দ্বিতীয় বিপ্লবের পর দেশে নতুন করে শিক্ষার্থীরা কেমন ক্যাম্পাস চান – এ বিষয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বিভিন্ন মতামত দেন সেসব তুলে ধরা হলো।

‘ক্যাম্পাস হবে সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত’

ঢাকা কলেজকে রাজনীতির পাওয়ার হাউজ বলা হয়। বর্তমানে প্রায় সকল শিক্ষার্থীই ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে। কোনো দলের লেজুরভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলে যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। পরিবর্তনের এই সময়ে আমাদের ছোট্ট ক্যাম্পাসটাও যেনো হয় ছাত্ররাজনীতি, সহিংসতা ও চাঁদাবাজ মুক্ত এবং ছাত্ররা যেনো পায় শিক্ষার্থীবান্ধব এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। ক্যান্টিন, ডাইনিং থেকে শুরু করে সব জায়গায় যেনো আসে স্বচ্ছতা। শিক্ষার্থীরা হলে সুন্দরভাবে থাকতে পারে এটার জন্য হল প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়া দরকার।


আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজের হল থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ নানা মাদক দ্রব্য উদ্ধার

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বসুলভ’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী বাহারুল ইসলাম আজাদ বলেন, প্রতিষ্ঠার ১৮০ বছর পার হলেও এতগুলো বছরে পড়াশোনার মান, সংস্কৃতি চর্চা, গবেষণা, পরিবহন সংকট, শিক্ষক সংকট প্রায় সবকিছুর দিক থেকেই পিছিয়ে রয়েছে এই ক্যাম্পাস। দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর আমরা চাইনা সেই একইভাবে আমাদের ক্যাম্পাস অন্যান্য ক্যাম্পাস থেকে পিছিয়ে থাকুক। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন ক্যাম্পাস হিসেবে আমার চাওয়া প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী কোনোরূপ ভীতি ছাড়াই গর্বের সহিত তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে ও অধিকার আদায় করে নিবে। ক্যাম্পাসে  গবেষণার মান বৃদ্ধি, ল্যাব বৃদ্ধি করা হোক। কোনো শিক্ষক তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে নম্বর কমানোর হুমকি দিতে পারবে না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক হবে সম্পূর্ণ বন্ধুত্বসুলভ। প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের দাবি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে অবিলম্বে সেই প্রশাসন বাতিল করার অধিকার শিক্ষার্থীদের দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীবান্ধব নতুন প্রশাসন গঠন করতে হবে।

‘সেশনজট ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’


ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. রহমত মিয়া বলেন, নতুন রঙে দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পুরোনো বছরের অপ্রাপ্তিগুলো কাটিয়ে নতুন আশা প্রত্যাশায় বুক বাঁধে। নতুন এই পরিবেশে আমাদের ক্যাম্পাসকেও নতুন করে সাজাতে চাই। লাইব্রেরীর উন্মুক্ত ব্যবহারের সুযোগ চাই,পরিবহন জটিলতার সমাধান চাই, সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস চাই, চাই গুণগত মানোন্নয়ন ও নিরাপদ পরিবেশ, পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ক্যাম্পাস চাই।


আরও পড়ুন: গুলিবিদ্ধ রাব্বিকে আর্থিক সহায়তা দিল ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগ

‘ক্যাম্পাস হবে বাড়ির মতো নিরাপদ’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ক্যাম্পাস বলতে আমরা নিজেদের সেকেন্ড হোম বুঝে থাকি। নিজেদের বাড়ির ক্ষেত্রে যেমন আমরা নিরাপত্তা, সুন্দর ও সুস্থ পরিবেশ কে গুরুত্ব দেই তেমনি ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম কিছু নয়। যেখানে শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের পূর্ণ নিরাপত্তা থাকবে, থাকবেনা কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর আধিপত্য, ছাত্রসংসদ ব্যতীত ছাত্ররাজনীতির অস্তিত্বও আর দেখতে ইচ্ছুক নই। নিরাপত্তার খাতিরে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধকরণকে জোরদার করতে হবে। এছাড়াও হলগুলো তে পর্যাপ্ত সিট এর অভাবে অনেক বৈধ সিট থেকে বঞ্চিত। অনেক মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অবৈধভাবে হল এ অবস্থান করে। দুজনের জন্য একটা করে বেড, রিডিং টেবিল বরাদ্দ। যা সুষ্ঠু পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটায়। হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সিট সংখ্যা বাড়িয়ে, ক্যান্টিনে স্বাস্থ্যকর খাবার এর নিশ্চয়তা প্রদান করে শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ তৈরি করাই শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।


এসডি/