অবরোধ শেষেও দেখা নেই ইলিশের


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, ১৯শে আগস্ট ২০২৪


অবরোধ শেষেও দেখা নেই ইলিশের
ছবি: প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা না পেয়ে জেলেরা হতাশ।ইলিশের ভরা মৌসুমেও উপকূলীয় কুয়াকাটা জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না রুপালি ইলিশ। একদম ইলিশ শূন্য খুঁটা জেলেরা। দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছেনা এখানকার জেলেদের। 


একদিকে ডিজেল ও মুদি মালামালের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে ট্রলার সাগরে গিয়ে মাছ ছাড়াই ফিরে আসছে। সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া প্রত্যেক জেলের পেছনে অনেক খরচ হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়ার পর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়েছে। আড়তদারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দাদন নিয়েছেন। কিন্তু মাছ না পাওয়ায় সে টাকা শোধ করবেন কীভাবে, তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। এমন চলতে থাকলে পেশা বদলে ফেলতে পারেন অনেকে।


আরও পড়ুন: দেশব্যাপী সংখ্যালঘু নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদে কলাপাড়ায় মানববন্ধন


উপজেলার নিবন্ধন করা জেলের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩শ, ৫ জন জেলে হতাশায় রয়েছেন। একদিকে ঋন সংকট, অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ৩৭ শতাংশ জেলে। শুধু জীবিকার তাগিদেই নয় প্রতি মূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকার করে অর্থনীতির চাকা সচল করছেন পেশাদার জেলেরা। উত্তাল সাগর ও বন্যার সময় জীবন যুদ্ধে হার না মানা এসব সাহসী আত্বনির্ভরশীল মানুষগুলো নির্ধারিত সময়ে কাঙ্খিত মৎস্য আহরনের লক্ষ্যে ছুটে যায় গভীর সমুদ্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে। এ সময় উওাল সাগরে ট্রলার ডুবে গেলে কারো কারো খোঁজ স্বজনেরা পেলেও অনেকেরই সরিল সমাধি হয়েছে সাগরে। 


উপজেলার আলীপুর, মহিপুর, লালুয়া, কুয়াকাটা ধুলাসার, ধানখালী, বাবলাতলার ঢোস, নিজামপুর, গঙ্গামতি, জেলে পল্লি ঘুরে জেলেদের সাথে কথা বললে তারা তাদের দুর্দশার কথা জানায়।  


গঙ্গামতির গ্রামে জেলে নবী হোসেন বলেন, তিনটা বছর হইছে তেমন মাছ ভাল পড়েনা এত মোগো মেরুদন্ড ভাইঙা ফালাইছে। আবার ২২দিনের ইলিশের অবরোধ নিষেধাজ্ঞা, আট মাসের জাটকা ধরা অবরোধ। এখন গাঙে সাগরে ও তেমন মাছ পোনা নাই। 


লালুয়ার চারিপাড়া গ্রামে জেলে আ. করিম বলেন, এই এলাকার ৯০শতাংশ মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন তিন বেলা খাবার যোগার করতে কষ্ট হচ্ছে। 


আরও পড়ুন: কলাপাড়ায় করলার বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি


এফবি মায়ের দোয়া মাঝি মো. কালাম হোসেন জানান, দুই দিন আগে ১৫ জন জেলে নিয়ে সাগরে মাছ শিকারের জন্য যান। কিন্তু সাগরেউত্তাল ঢেউ থাকার কারণে শিববাড়ীয়া নদীর নোঙর করে আছেন। 


উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে আশা করা হচ্ছিল, জেলেরা প্রচুর ইলিশ নিয়ে ফিরবেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে ট্রলারের মালিক ও জেলেদের। আবহাওয়া ভাল হলে জেলেরা সমুদ্রে আশানুরূপ মাছ পেলে অর্থনৈতিক দুর্দশা-দৈন্য কাটিয়ে উঠতে পারবেন।


এসডি/