এমপি সুবিধায় আনা ৪৪ বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিলো কাস্টমস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৩ অপরাহ্ন, ২৪শে আগস্ট ২০২৪
সংসদ সদস্য (এমপি) কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে শুল্ক বিভাগ। যারা গাড়িগুলো আমদানি করেছিলেন তারা আর সংসদ সদস্য না থাকায় এগুলো আটকে দেওয়া হয়।
সোমবার (৫ আগস্ট) ছাত্রজনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এ বিধানের আওতায় আনা সাতটি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হলেও এখনো বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে নিবন্ধন করা হয়নি।
এসব গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দর, মংলা বন্দর ও কমলাপুর আইসিডি দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। আমদানিকারকের পক্ষে এসব গাড়ি খালাসের দায়িত্বে ছিলেন সিএন্ডএফ এজেন্ট নাভানা লিমিটেড, গোল্ডেন স্টার এজেন্সি এবং ছেরি ইন্টারপ্রাইজসহ ছয়-সাতটি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: আন্দোলনে অস্ত্র ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে: ডিএমপি কমিশনার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সার্ভারের তথ্য ও সংশ্লিষ্ট কাস্টম স্টেশন কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খালাসের অপেক্ষায় থাকা এসব গাড়ির আমদানিকারকরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই এসব গাড়ি খালাস করতে হবে।
আগস্ট মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে এমপি সুবিধায় খালাস নেয়া ৭টি গাড়ির বিষয়ে আইন মন্ত্রণায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, এই ৫১টি গাড়ির (যার বেশিরভাগই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো) আমদানি মূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিপাত আরও কমবে, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে
এসব গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে কম দামের ল্যান্ড ক্রুজারটি আমদানি করা হয়েছিল ৯৮ লাখ টাকার সামান্য কিছু কমে। শুল্ক দিতে গেলে গাড়িটির দাম পড়বে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ৩৩৪৬সিসির এ গাড়িটির স্বাভাবিক শুল্ককর হার ৮২৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করতে পারেন। এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে তবে এমপিদের তা দিতে হয় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি যেসব গাড়ি খালাস হয়েছে তা ৬ আগস্টের আগে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন ছিল। ফলে আইনানুগভাবে তা আটক করার সুযোগ ছিল না। তবে যেসব গাড়ি ৬ আগস্টের পরে আমদানি হয়েছে তা খালাসের সুযোগ নেই। এ ধরনের গাড়ি খালাস করতে হলে শুল্ককর পরিশোধ সাপেক্ষে খালাস করতে হবে।'
আরও পড়ুন: ফেনীতে সেনাবাহিনী প্রধান বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে
তিনি বলেন, সংসদীয় আসনে এমপিদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ সুবিধা দেওয়া হয়। বর্তমানে সংসদ ভেঙে দেওয়ায় তা শুল্কমুক্ত সুবিধায় খালাসের সুযোগ নেই। আইন অনুযায়ী, স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই খালাসের অপেক্ষায় থাকা গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে হবে।' আইন প্রণেতাদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে এইচ এম এরশাদের শাসনামলে শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা চালু করা হয়েছিল।
এমএল/