যে কারণে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন, জানালেন সোহেল তাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২১ অপরাহ্ন, ৩০শে আগস্ট ২০২৪

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেও সে বছর ৩১ মে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। কেন তিনি তখন পদত্যাগ করেছিলেন, সেই কারণ জানালেন হোসেল তাজ নিজেই। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবেই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম।’
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি।
তানজীম আহমেদ সোহেল তাজ বলেন, সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ ছিল অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ। সুতরাং একজন পদত্যাগ করার চেয়ে বড় প্রতিবাদ তো হতে পারে না। আমি নীরবে পদত্যাগ করে সরে গিয়েছিলাম, মেসেজ তো ছিল।
আরও পড়ুন: পলাতক বায়তুল মোকাররমের খতিব, জুমার নামাজের দায়িত্বে যিনি
তিনি বলেন, মর্নিং শোজ দ্য ডে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল আমার দল একটি নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিল, যেটার নাম ছিল দিন বদলের সনদ। দিন বদলের সনদটা ছিল এক্সাটলি আজকে ছাত্ররা যেটা নিয়ে আন্দোলন করছে এবং মুক্তিযুদ্ধ করে যে লাখ লাখ শহীদ রক্ত দিয়েছিলেন, সেই স্পিরিটটাই ছিল দিন বদলের সনদে।
সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছিলাম বাংলাদেশকে পরিবর্তন করব, একটি নতুন বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলব, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করব, ইনস্টিটিউশনগুলোকে মজবুত করব। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। আমাদের প্রশাসনে কোনো রাজনীতি হবে না। পুলিশ উন্মুক্ত একটি পেশাদার বাহিনী হিসাবে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী হিসাবে কাজ করবে। আমি চেয়েছিলাম রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি রাজনৈতিক কালচার গড়ে তুলব, আর যেটা আমাদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি হবে। কিন্তু আমি যখন দেখলাম আমরা সেই পথে যাচ্ছি না। কারণ, এটাই আমি বলছি মর্নিং শোজ দ্য ডে, সকালই বলে দেয় দিন কেমন হবে।
আরও পড়ুন: দুজন সরকারে এসেছি, বাকিরা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে মাঠে: নাহিদ
তার পদত্যাগে একজন রাজনৈতিক নেতার প্রভাব খাটানোর বিষয়ে সোহেল তাজ বলেন, এটা একেবারেই ঠিক না। এরকম কোনো ঘটনাও ঘটেনি যে আমার ওপরে কেউ আক্রমণ করবে, এরকম হয়নি। এটা কে বা কারা এটা বলেছে জানি না। আমি সার্বিকভাবে পলিসি এবং যেভাবে কাজ চলছিল সেটার প্রতিবাদে চলে গিয়েছি। এখানে আরও কিছু বিষয় আছে। আমি মনে করেছি আমার যে ক্যাপাবিলিটি সেই অনুযায়ী আমি কাজ করতে পারছিলাম না, স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলাম না। কারণ, আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করব, আমি উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলাম প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। আমি উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলাম পুলিশকে একটি প্রফেশনাল ডিসিপ্লিন ফোর্স হিসাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করব। আমার অনেক পরিকল্পনা ছিল। যখন দেখলাম সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব না তাই সেখান থেকে সরে গেছি।
এমএল/