রাবিতে পিআইবির ‘শিকারি সাংবাদিকতা’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:৪২ অপরাহ্ন, ১লা অক্টোবর ২০২৪


রাবিতে পিআইবির ‘শিকারি সাংবাদিকতা’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
ছবি: প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘বাংলাদেশে শিকারি সাংবাদিকতার উত্থান’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 


মঙ্গলবার(১লা অক্টোবর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস্ কমপ্লেক্স কনফারেন্স কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং রাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের যৌথ আয়োজনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 


পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। সভাপ্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আল মামুন।


আরও পড়ুন: রাবিতে এবছর ভর্তির সুযোগ পেলেন ১৮ জন বিদেশি শিক্ষার্থী


আ-আল মামুন তার বক্তব্যে সাংবাদিকতার ইতিহাস তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিভ্যুলেশনের পর আধুনিক রাষ্ট্র, নাগরিক, সাংবাদিকতার ধারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। গত শতকের পঞ্চাশের দশকের পর দেখা যাচ্ছে মিডিয়ার মালিকানা অল্প কিছু কর্পোরেশনের হাতে সংকুচিত হয়ে গেলো। এ থেকে সাংবাদিকতার ওয়াচডগ ভূমিকা থেকে সরে এসে কোলে বসে থাকা কুকুরের মতো ল্যাপডগের ভূমিকা পালন করছে। অর্থাৎ, মালিকানার স্বার্থ বাস্তবায়নে কাজ করতে শুরু করলো।


তিনি আরো বলেন, মিডিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বটে। তবে তারা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে মালিকানা, বিজ্ঞাপন, সোর্সের মতো ফিল্টার ব্যবহার করে। আমাদের এখানে আশির দশকে একটা ল্যাম্পেন বুর্জোয়া শ্রেণি গড়ে উঠেছে। পরে নব্বইয়ের দশকে এরা মিডিয়ার মালিকানা এবং পরে পার্লামেন্টে পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছে। এ ছাড়া প্রযুক্তির বিকাশে মিডিয়াগুলো এখন ভুক্তভোগী/শিকারকে শিকারী হিসেবেও উপস্থাপন করছে।' তিনি বাংলাদেশে ২০০৭ সালের পর থেকে শিকারী সাংবাদিকতার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন।


আরও পড়ুন: রাবির অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর বেহাল দশা


অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর নতুন করে আমরা ভাবতে পারছি আগে যা ভাবতে পারতাম না। সমাজে বিভিন্ন প্রভাবক গ্রুপ আছে যারা নিজেদের স্বার্থ  হাসিলে কাজ করে। প্রধান বক্তা হিসেবে প্রফেসর আল মামুন যা আলোচনা করেছেন এর বাইরেও মনে হয় সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার সুযোগ আছে। কেননা এটা একটা বিরাট পরিসর। বাংলাদেশে বয়ান তৈরির একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আছে; এর বাইরে কেউ চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। কোনো বিষয়কে যেভাবে অতি সরলীকরণ করা হয়, সেটা আসলে করা অনুচিত। এজন্য সবাইকে শেখার পথে এগিয়ে আসতে হবে।


অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাজই শিকার করা। এটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হতে পারে। কাওকে টার্গেট করে তার ঘটনা সবার সামনে তুলে আনা, দুর্নীতি অপকর্ম প্রকাশ। এটা যখন নেতিবাচক ভাবে উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য করা হয় তখন বিষয়টা অন্যদিকে মোড় নেয়। অনেক ঘটনা ঘটার আগে সাংবাদিকদের ইনফর্ম করা হয়। তারা আসলে তারপর ঘটনা ঘটে। একটা গোষ্ঠী আছে যারা নিজেরাই নিউজ হতে চায় আসলে।


কাঙাল হরিনাথের সময়কারের সাংবাদিকতা এখন খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ সব মিডিয়াগুলো কোনো একটা কর্পোরেট গ্রুপের অধীনে। যতদিন এই মালিকানা এমন থাকবে ততদিন প্রিডেটরি জার্নালিজম চলতে থাকবে।


এ সময় আলোচক হিসেবে আরও বক্তৃতা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মো. মশিহুর রহমান।


এমএল/