ইয়াবা দিয়ে বিএনপির নেতাকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:০৫ অপরাহ্ন, ৪ঠা অক্টোবর ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ইয়াবা দিয়ে বিএনপির নেতাকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নেতার নাম নোমান মিয়া। সে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ।
বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে আশুগঞ্জ শহরের জহিরুল হক মুন্সী শপিং কমপ্লেক্স এলাকার বাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুগঞ্জ থানার ওসিসহ দুই উপ-পরিদর্শককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্তরা হল আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন, থানার উপ পরিদর্শক দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর বিকেলে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান। এবং এই ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জেলা পুলিশের উধ্বতণ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। থানা থেকে ছাড়া পেয়ে এই ঘটনায় রোমান মিয়া বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী, মেয়র-ওসির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
লিখিত অভিযোগে জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশুগঞ্জ বাজারের জহিরুল হক মুন্সী মার্কেট এলাকায় নোমান মিয়া ভাড়া বাসায় যৌথ বাহিনীর একটি দল আসেন। এ সময় সেনাবাহীনির সদস্যরা পুরো বাসায় তল্লাসী চালায়। তল্লাসী করার পর কিছু পায়নি। একপর্যায়ে আশুগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী নোমানের বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় হঠাৎ করে কিছু ইয়াবা টেবলেটের একটি প্যাকেট সোফার কাছে ফেলে দেয়। এবং ঘরে থাকা নগদ ৫ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা ও ঘরে থাকা স্বাক্ষর করা চকে বই নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। পরে তাকে ধরে নিয়ে থানায় চলে আসেন। থানার আনার পর ঘটনাটি পুলিশের উধ্বতণ কর্মকর্তাদের জানালে তখন পুলিশ সদস্যরা ইয়াবা দিয়ে গ্রেফতার করা হবে না আশ^াস দেয়া হয়।
এদিকে, নোমান মিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলায় ৬ নাম্বার আসামী ছিল নোমান মিয়া। সেই মামলায় নোমান মিয়াকে আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে সকালে মামলার বাদী রমজান মিয়া এসে নোমানের বিষয়ে কোন অভিযোগ না থাকায় পুলিশ দুপুরে ১২টার দিকে ছেড়ে দেয় নোমানকে।
আরও পড়ুন: পেকুয়ায় শিক্ষককে অপহরণ করে ৪০ লাখ মুক্তিপণ দাবি
এই বিষয়ে মামলার বাদি রমজান মিয়া বলেন, তিনি নোমান মিয়াকে ভুলক্রমে আসামি করা হয়েছে। এবং নোমানের বিষয়ে আদালতে এফিওফিড করে দেয়া হয়েছে। তাই নোমান মিয়াকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে বলেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, নোমান মিয়া একটি মামলার ৬ নং আসামি। রাতে তাকে আটক করা হলেও সকালে বাদি নোমান মিয়ার নাম ভুলক্রমে এজাহারে লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। বাদি বিষয়টি আদালতেও জানিয়েছেন। বাদীর বক্তব্যের কারণেই রোমান মিয়াকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে, ইয়াবা দিয়ে ফাসনোর চেষ্টার বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওসিসহ তিনজনকে পুুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে কেউ অপরাধ করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। কঠোর ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরএক্স/