গুম কমিশনকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, ৯ই নভেম্বর ২০২৪


গুম কমিশনকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার
ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বলপূর্বক গুমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং তাদের জবাবদিহি করতে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আপনাদের যা কিছুর প্রয়োজন তার সব সুবিধা দেব এবং সব ধরনের সহায়তা করব। 


শনিবার (৯ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা এবং প্রধান কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠকের সময় কমিশন সদস্যদের এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়। 


কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বৈঠকে বলেন, তারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১৬০০টি অভিযোগ পেয়েছেন, ৪০০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন এবং ১৪০ অভিযোগকারীর সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।


আরও পড়ুন: জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের ডাক, কঠোর হুঁশিয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের


বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, এ বিষয়ে আরও কাজ করার আগে তারা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দেবেন।


আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সরকার প্রয়োজনে কমিশনের মেয়াদ দুই বছর বাড়াবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষার জন্য আইনি ব্যবস্থা তৈরিসহ প্রয়োজনীয় সব আদেশ জারি করবে।


কমিশনের একজন সদস্য বলেন, অভিযোগের সংখ্যা দেখে আমরা অভিভূত হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতিশোধের ভয়ে অনেকেই এখনও কমিশনের নিকট আসছেন না। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ঘটনার সংখ্যা এখন পর্যন্ত যতটা রিপোর্ট করা হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি হতে পারে।


কমিশনের সদস্যরা বলেন, তারা সন্দেহ করছেন যে, জোরপূর্বক গুমের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৫০০ হতে পারে। কারা অপরাধ করেছে এবং কারা তাদের নির্দেশ দিয়েছে তা চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছে কমিশন। 


আরও পড়ুন: মানবিক পুলিশ গড়তে স্বাধীন কমিশন গঠন অপরিহার্য: সাখাওয়াত হোসেন


তারা বলেন, ভুক্তভোগীদের অনেকেই কারাগারে রয়েছেন, কেউ কেউ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, কারণ তাদের গ্রেফতার দেখানোর পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিছু গুমের শিকার প্রতিবেশী ভারতের কারাগারে বন্দি আছে বলে ধারণা করা হয়।


কমিশনের সদস্যরা গোপন স্থানে আলামত রক্ষার জন্য সরকারের বিশেষ সহায়তা চেয়েছেন, যেখানে ভিকটিমদের আটকিয়ে রাখা হয়েছিল।


কমিশনের একজন সদস্য বৈঠকে বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আমাদের বলেছেন যে, তারা বছরের পর বছর সূর্যের মুখ দেখেননি। তারা উপলব্ধি করতে পারে যে, এটি একটি নতুন দিন যখন সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয়েছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিদেশ সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্ভব হলে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান কমিশনের ওই সদস্য।


আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রতিহতে কঠোর হুঁশিয়ারি আসিফ মাহমুদের


বৈঠকে উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কমিশন অভিযুক্তদের তালিকা দিলেই তারা তা বাস্তবায়ন করবেন।


প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম কমিশনের ফল জনসাধারণের ডোমেইনে রাখার এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তত্ত্বাবধানকারী ব্যক্তিদের উন্মোচন করার গুরুত্বের উপর জোর দেন।


বৈঠকে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, নুরজাহান বেগম, আদিলুর রহমান খান, এম সাখাওয়াত হোসেন, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল হাফিজ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য প্রেস সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


এমএল/