যে কারণে শিল্পপতিকে সাত টুকরো করেন পরকিয়া প্রেমিকা রুমা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:০৭ অপরাহ্ন, ১৪ই নভেম্বর ২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পলিথিনে মোড়ানো সাত টুকরো লাশের সন্ধান মিলেছে। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। প্রেমের সম্পর্কের জেরে জসিম উদ্দিন মাসুম নামের এক ব্যবসায়ীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জবাই করে হত্যা করা হয়। লাশ গুম করার উদ্দেশে টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা জানান।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে খেলতে গিয়ে প্রতিবেশীর অরক্ষিত সেপটিক ট্যাংকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২) সাত টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে গুলশান থানার একটি জিডির সূত্র ধরে আমরা লাশের পরিচয় জানতে পারি।ভিকটিম হলেন ফতুল্লার চাঁদ ডাইংয়ের মালিক শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুম। তিনি বিবাহিত এবং সন্তান রয়েছে।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি রুমা আক্তারকে (২৮) রাজধানীর কাফরুল শেওড়াপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। পরে আসামিকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে তার দেখানো স্থান থেকে একটি চাপাতি, হেসকো ব্লেড ও ভুক্তভোগীর পরিহিত সাফারি, এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যুষ কুমার মজুমদার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, প্রেমের সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শিল্পপতি মাসুমের রুমার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এর পাশাপাশি মাসুম অন্য আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বিষয়টি জানতে পেরে, রাগে-ক্ষোভে ও আবেগের বশবর্তী হয়ে তাকে খুন করে। গত ১০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মূলত সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে তারা মেলামেশা করতেন। প্রথমে তাকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অঙ্গান করা হয়। এরপর চাপাতি দিয়ে জবাই করে লাশ টুকরো টুকরো করা হয়। সেই টুকরো অংশ প্রথমে পাঠাও ও পরে সিএনজি ভাড়া করে বিভিন্ন স্থানে ফেলেছে রুমা। গ্রেফতার রুমা ময়মনসিংহ গৌরিপুর থানার তারাকান্দা এলাকার নজর আলীর মেয়ে।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে কৃষকের ২৮ টাকার আলু এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়! বীজ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
নিহত মাসুমের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর বিকেলে জসিম গাড়িতে করে বাসা থেকে বের হয়ে গুলশানে যান। এরপর ব্যক্তিগত গাড়িচালককে ছেড়ে দেন। চালককে জানিয়েছিলেন, অন্য গাড়িতে নারায়ণগঞ্জের কারখানায় যাবেন তিনি। তবে রাতে বাসায় না ফেরা ও মোবাইল বন্ধ থাকায় পরদিন গুলশান থানায় তার বড় ছেলে জিডি একটি করেন।
এর আগে, বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কের উত্তর পাশে ৫ নম্বর সেক্টরের ব্রাক্ষণখালী এলাকায় লেকের পাড় থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাত যুবকের লাশের সাত টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। তিনটি কালো পলিথিনের ব্যাগে করে অজ্ঞাত যুবকের মাথা, দুই হাত, শরীরের পেছনের অংশ, নাড়িভুঁড়ি, বাঁ পা, বাঁ উরুর কাটা অংশ উদ্ধার করা হয়।
এমএল/