ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ইবি ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৩৯ অপরাহ্ন, ২৭শে নভেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর এবং কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে ইসকন সমর্থকদের হামলায় চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির।
আরও পড়ুন: ইবিতে পলিথিন মুক্তকরণ কর্মসূচি
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে পূর্বঘোষিত সাপ্তাহিক সংহতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এর আগে বিকাল ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে জড়ো হতে শুরু করে শাখা ছাত্রশিবির, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। পরে তাদের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখ পাড়া বাজার প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সমবেত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদেরকে ‘হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই, ইসকনের ঠাঁই নেই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’, ‘তাকবিরের কারণে, ভয় করি না মরণে’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও এক হও’ ইত্যাদির শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারকে আশ্রয় দিয়ে ভারত পুরো বাংলাদেশের ছাত্র জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্বৈরাচার সরকার পতিত ৩ মাস হওয়ার পরেও তারা সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে দিয়ে পুরো দেশে লেলিয়ে দিচ্ছে। যখন ছাত্র জনতা ৫ আগস্টের পরে সকল মতের, ধর্মের মানুষ ঐক্যের কথা বলেছি তখন তারা হত্যার মতো নজির দেখাচ্ছে। এছাড়াও তারা বাংলাদেশকে হায়দারবাদে পরিণত করার চেষ্টা সেই নীলনকশা থেকে ফিরে আসেনি। তৈরি করে ফেলেছে। বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবে ছাত্রসেনা, ছাত্রদল, জমিয়তে তালাবা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম সকল ছাত্র সংগঠনের সাথে সাপ্তাহ সংহতি কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। যারা আমাদের ঐক্যের মধ্যে কোনো ধরনের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে তাদেরকেও পতিত সরকারের মতো দমন করব।
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান বলেন, তারা নিজেদেরকে ধর্মীয় সংগঠন দাবি করে কিন্তু তারা সন্ত্রাসী সংগঠন। কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন এ দেশে ঠাঁই পেতে পারে না। অনতিবিলম্বে ইসকন নামে এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে ছাত্রলীগের মতো নিষিদ্ধ করতে হবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা খুনি স্বৈরাচারী হাসিনাকে পতিত করেছি কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি। তাদের স্বৈরাচারী শাসনামলে যেভাবে খুন করেছে, গুম করেছে, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং লাঠিয়াল বানিয়ে ছাত্রলীগ দিয়ে যেভাবে নির্যাতন করেছে তা বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন ভুলে যাবে না।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা কোন বার কাউন্সিল, কোন সমিতির, কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রীতি সারা বিশ্বে উদাহরণ দেওয়ার মতো। আমরা মন্দির পাহাড়া দিয়েছি যাতে কেও না ভাঙ্গে আর আপনারা আমাদের মসজিদ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গুণীর কদর যে দেশে থাকে না সেই দেশ অগ্রসর হতে পারে না: ইবি উপাচার্য
আওয়ামী দোসরদেরকে তিনি আরও বলেন, আপনরা আমাদেরকে দুর্বল ভাববেন না। আমরা চুপ ছিলাম, চুপ আছি শুধুমাত্র দেশকে ভালোবাসি বলে। ছাত্রশিবির যদি প্রতিশোধের পথ বেছে নিতো তাহলে স্বৈরাচারী হাসিনার পা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যেতো না।
এসডি/