বোনের বিয়েতে যাওয়া হলো না অন্তঃসত্ত্বা রেশমার


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০০ অপরাহ্ন, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৪


বোনের বিয়েতে যাওয়া হলো না অন্তঃসত্ত্বা রেশমার
ছবি: প্রতিনিধি

ঢাকা থেকে বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্তঃসত্ত্বা রেশমা আক্তার (২৮) তার স্বামীর সঙ্গে ৬ বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাদারীপুরের ডাসারে। ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলেসহ নিহত হন অন্তঃসত্ত্বা রেশমা। 


আরও পড়ুন: মাদারীপুরে বাবার হাতে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে খুন


শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে এসেছে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পুয়ালী গ্রামে। 


একই ঘটনায় শোকে মাতম চলছে বিয়ে বাড়িতেও। যাদের অবহেলায় এমন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।


জানা যায়, শুক্রবার মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পুয়ালী গ্রামের মালেক ঘরামির বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছিল। ছোট মেয়ে পুতুল আক্তারের সঙ্গে পাশের মাইজপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের বিয়ের দিন ধার্য ছিল। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকেই বিয়ের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। 


বোনের বিয়েতে অংশ নিতে মোটরসাইকেলযোগে স্বামী-সন্তানসহ বিয়ে বাড়িতে আসছিলেন রেশমা। তবে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল দেয়ার জন্য তাদের মোটরসাইকেলটি যখন দাঁড়িয়ে ছিল সেই সময় পেছন থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের চাপা দেয়। 


এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রেশমার ছেলে আব্দুল্লাহ এবং গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে রেশমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাগত সন্তানসহ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা রেশমা।


এই খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে রেশমার পরিবারে। এতে মুহূর্তেই বিয়ের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। 


রেশমার বোন পুতুল আক্তার বলেন, ‘কথা ছিল আমাদের পাঁচ বোন একসঙ্গে আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। সে জন্যে রেশমা আপু বাড়িতে আসছিলেন। কিন্তু সে আর আসতে পারল না, আসলো তার লাশ। তার সঙ্গে আমার ছোট ভাগিনা আর অনাগত সন্তানও হত্যা হলো। এভাবে আর কত প্রাণ গেলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল কমবে। আমি ওই বাসের চালক, হেলপার আর মালিকের বিচার দাবি করছি।’


আরও পড়ুন: মাদারীপুরে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম না পাওয়ায় সব আড়ত বন্ধ


এদিকে অনাগত সন্তানসহ দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে রেশমার স্বামী সুমন মিয়ার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দোষীদের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি টোলে টাকা দিচ্ছিলাম। ওই সময় পেছন থেকে একটি বাস এসে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে চাপা দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। আমি চোখের সামনে দেখলেও কিছু করতে পারেনি। আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিলো ঘাতক বাসের চালক। আমি ওদের ফাঁসি চাই।


এসডি/