Logo

ইসকন ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের তৎপরতা

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১১
156Shares
ইসকন ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের তৎপরতা
ছবি: সংগৃহীত

ইসকন ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের তৎপরতা

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সংস্কৃত বিভাগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া দুইজন অস্থায়ী শিক্ষকের চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি দুজনের চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়। 

এর প্রেক্ষিতে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এই দুই শিক্ষক—হিমেল কর্মকার ও পবিত্র কুমার হীরার চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য ভাইভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে, হিমেল কর্মকার সরাসরি ইসকন সমর্থিত এবং পূর্বে তার শিক্ষক নিয়োগে ইসকনের প্রভাব বিস্তারের অংশ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অপরদিকে,পবিত্র কুমার হীরা গোপালগঞ্জের এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তদবিরে অস্থায়ী নিয়োগ পান।

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালে সংস্কৃত বিভাগের দুইজন স্থায়ী শিক্ষক (কুশল বরন চক্রবর্তী ও রীতা রানী ধর) শিক্ষাছুটিতে গেলে তাদের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পান হিমেল কর্মকার ও পবিত্র কুমার হীরা। পরে স্থায়ী শিক্ষকরা তাদের স্বপদে ফিরলেও অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এই দুই শিক্ষক এখনও বিভাগে রয়েছেন।

বিভাগের একাধিক সূত্র এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নিশ্চিত করেছেন, তাদের নিয়োগ ছিল শুধুমাত্র শিক্ষাছুটিজনিত কারণে এবং নিয়ম অনুযায়ী শূন্য পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু সংস্কৃত বিভাগের বর্তমান সভাপতি বিধিমালার ফাঁকফোকর ব্যবহার করে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুইজন শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তী এবং রীতা রানী ধর এদের শিক্ষাছুটির স্থলে পবিত্র কুমার হিরা এবং হিমেল কর্মকারের অস্থায়ী নিয়োগ হয় প্রায় ছয় বছর আগে পরবর্তীতে ছুটিতে থাকা ২ জন শিক্ষক পুনঃরায় যোগদান করায় বর্তমানে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ প্রাপ্ত ২ জন শিক্ষককে স্থায়ী করার প্রয়োজন নাই বরং শূন্য পদের চাহিদা থাকলে  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও পবিত্র কুমার হীরা ও হিমেল কর্মকারের অস্থায়ী নিয়োগ পাওয়ার পিছনে তৎকালীন আওয়ামী লীগের এবং ইসকনের সংশ্লিষ্টতার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালে Analysis BD–এর এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ইসকনের চাপের বিষয়টি। বিশেষ করে সংস্কৃত বিভাগে ইসকন সমর্থিত শিক্ষকদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে তিন জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য চাপ দেয় ইসকন। শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয় প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইসকনের প্রার্থী থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন স্বামীবাগ আশ্রমের গরহরি দাস। ইতিপূর্বে একই বিভাগের শিক্ষক কুশল বরন চক্রবর্তী ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের সখ্যতার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে এবার হিমেল কর্মকারের সাথে চিন্ময়ের  ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ পাওয়া গেছে।জানা যায় নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিশেষ চাপ প্রয়োগ করেছিল ইসকন। চিন্ময়ের সাথে হিমেল কর্মকারের বেশ কয়েকটি ছবি এবং অভিযোগের কিছু ফোনালাপ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

আরেকজন পবিত্র কুমার হীরা গোপালগঞ্জে একটি কলেজে কর্মরত ছিলেন কিন্তু অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ পেয়ে ছয় বছর যাবত চাকরি করছেন সংস্কৃত বিভাগে। অনুসন্ধানে জানা যায় পবিত্র কুমার হীরার নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। গোপালগঞ্জ ও আওয়ামী প্রভাবে সংস্কৃত বিভাগে ঢোকে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুইজন শিক্ষক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধীতা করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কোনো শিক্ষক স্থায়ী হতে পারেন না। 

এবিষয়ে চবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে, শুন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে চাকরি স্থায়ীকরণের কোনো সুযোগ নেই। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন, অস্থায়ী বা খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালা সংশোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি ড.লিটন মিত্র বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালার অনেক কিছুই এখন বলা সম্ভব না আমাকে জেনে বলতে হবে।বিস্তারিত পরে জানাবেন বলে সময় নেন।

পরবর্তীতে তিনি বলেন, দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ছুটি জনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী। বিধিমালার বাইরে গিয়ে কিছু করা হয়নি।একই ভাবে নিয়োগ পাওয়া আরো অনেক শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য বিভাগে চাকরি স্থায়ীকরণের সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD