সরকারি কর্মচারীদের ৭ দাবিতে মহাসমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১১ অপরাহ্ন, ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫

১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ও নবম পে-স্কেল বাস্তবয়নসহ ৭ দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করছেন।
(৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ মহাসমাবেশ শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত চলবে এ সমাবেশ।
সমাবেশ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় সারাদেশের সব অফিসে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ার বর্ণনা দিলেন শহীদ শাওনের পিতা
মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সবাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারি চাকরির সব গ্রেডে চরম বৈষম্য। শতাংশের হারে বেতন বাড়ালে কারও বাড়ে ৩ হাজার টাকা, কারও বাড়ে ৩০ হাজার টাকা। তার মানে তেলে মাথায় আরও তেল ঢালা হয়। আর যার মাথায় তেল নেই, তার আরও শুকিয়ে যায়। এ সরকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে চেয়ারে বসেছে। কিন্তু তারা কোনো বৈষম্য নিয়ে নিজেরা কথা বলে না। কোনো বক্তব্য-বিবৃতিও দেয় না। আপনারা যারা বৈষম্য নিয়ে রাস্তায় আসেন, তাদের কারওটা শোনে, কারও কথা আবার সরকার শোনে না।
সমাবেশে সরকারি কর্মচারীরা বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নিরলস মানুষের সেবা দিয়ে আসছে। তারা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অবিলম্বে ৭ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে না নেওয়া হলে সারাদেশের সব সরকারি অফিসে ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
আরও পড়ুন: ভারতের রাজ্য সভায় শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১১-২০তম গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসান। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারী সমিতির সমন্বয়ক মো. রফিকুল আলম।
কর্মচারীদের সাত দফা দাবিগুলো হলো-
১. বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পে-কমিশন গঠন ও পে-স্কেল ব্যক্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তী কালের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য) জানুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর করতে হবে।
২. যেসব কর্মচারী মূল বেতনের শেষ ধাপে উন্নীত হয়েছেন, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে। বেতন স্কেলের বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ ধাপে বেতন স্কেলে নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
৩. সচিবালয়ের মতো সব সরকারি, আধাসরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সমপদগুলোর পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করে কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য দূর করতে হবে।
৪. ২০১৫ সালে পে-স্কেলের গেজেটে প্রত্যাহার করা তিনটি টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল ও সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাচুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্র্যাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে শতভাগ নির্ধারণ ও পেনশন গ্র্যাচুইটি এক টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: এই বছরের শেষের দিকে নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
৫. বাজারমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুল্যস্ফীতি বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করে প্রদেয় সব ভাতাদি পুনর্র্নিধারণ, ১১-২০ গ্রেডের রেশন ব্যবস্থার প্রর্বতন ও সরকার প্রদত্ত গৃহ ঋণ সুবিধা সহজ করতে হবে।
৬. ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা পাঁচ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। এছাড়া টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দিতে হবে।
৭. উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের প্রকল্পের চাকরিকাল গণনা করে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান করার অবকাশ নেই মর্মে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক আদেশ ও আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে।
এমএল/