অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার -২

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে সংঘটিত গণধর্ষণ মামলার শীর্ষ দুই আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকারের দিক নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করে সিরাজদিখান থানা পুলিশ মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামী আসামী- নুরুল ইসলাম নুরু (৩৫) ও ৪ নং আসামী- মো. বাবুল (৩৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে একাধিক যানবাহনের সংঘর্ষ , আহত ১৫ নিহত ১

প্রসঙ্গত: গত ২১ ফেব্রুয়ারী জনৈক নারী (২৯) সিরাজদিখান থানায় হাজির হয়ে ৫ জন ব্যক্তি কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মামলা রুজু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে।

পুলিশ সুপার, মুন্সীগঞ্জ মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করে সিরাজদিখান থানা পুলিশ মামলার এজাহারনামীয় আসামী নুরুল ইসলাম নুরু (৩৫), পিতা-ওসমান গণি, স্থায়ী ঠিকানা: চর চসুমুদ্দিন, উপজেলা/থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জকে গত ২১ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিটের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজদিখান থানাধীন বালুচর ইউনিয়নের মোল্লাবাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করে।

পরবর্তীতে অপর অভিযুক্ত মো. বাবুল (৩৩), পিতা. সামছুদ্দিন, সাং- চর চসুমদ্দিন, থানা. সিরাজদিখান, জেলা. মুন্সীগঞ্জ-কে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকা হতে রবিবার ২৩ ফেব্রুয়ারী তারিখ রাত ২.২০ মিনিটের সময় গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম গত ৬-২-২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে সিরাজদিখান থানাধীন মোল্লাবাজার সিএনজি স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে আসার পথে ইজিবাইকযোগে সন্ধ্যা আনুমানিক ১৮.৪৫ ঘটিকায় সিরাজদিখান থানাধীন ডিসি প্রজেক্টের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র অভিযুক্ত মো. রহিম (৩২), পিতা-গিয়াস উদ্দিন, স্থায়ী ঠিকানা. চর চসুমুদ্দিন, উপজেলা/থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জ এবং অপর অভিযুক্ত মো. আরিফ সরকার (৩০), পিতা-কালাম সরকার, স্থায়ী ঠিকানা. চর চসুমুদ্দিন, উপজেলা/থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সীগঞ্জ‘দ্বয় অটোরিক্সা থামিয়ে ভিকটিমের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চালককে তাড়িয়ে দেয়। 

অতঃপর তারা ভিকিটিমকে জোরপূর্বক সিরাজদিখান থানাধীন মোল্লাকান্দি বালুরচর সাকিনস্থ ডিসি প্রজেক্টের ভিতরে নির্জন নদীর পাড়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝোপঝাড়ে নিয়ে গেলে তাদের অন্যান্য সহযোগীরা সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম নুরু (৩৫), মো. রহিম (৩২), মো. আরিফ সরকার (৩০), মো. বাবুল (৩৩) ও মো. সোলেমান (৩০)‘গণ ভিকটিমের পরিহিত কাপড় চোপড় খুলে মাটিতে ঘাসের উপর শোয়াইয়া সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকা হতে রাত ১১.০০ ঘটিকা পর্যন্ত পালাক্রমে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে অভিযুক্তগণ ভিকটিমকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে রাস্তায় চলমান একটি অটো গাড়িতে তুলে দেয়।

 গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম নুরু (৩৫) বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয় এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় আলামত জব্দ করা হয়। মামলার তদন্ত কার্যক্রম ও পলাতক আসামী গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, নার্সকে মারধরের অভিযোগ স্বজনদের বিরুদ্ধে

এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ কাজী হুমায়ন রশীদ বলেন, সিরাজদীখানে সংঘটিত গণধর্ষণ মামলার গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে, অভিযুক্ত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এসডি/