ধান গাছ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শহীদ আবু সাঈদে প্রতিকৃতি
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৫৩ অপরাহ্ন, ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গাজীপুরের শ্রীপুরে কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এনামুল তার ফসলি মাঠে ধান চাষ করে ধানগাছের চারা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে অটোরিকশা-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২
উপজেলার টেংরা বাজার পাড় হলেই বেকাসাহারা গ্রামে মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ পাশের বিস্তীর্ণ ধানখেতে সবুজ ও বেগুনি রঙের ধানগাছ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা শহীদ আবু সাঈদের অবয়ব চিত্র দেখে অনেকে থমকে যান। সড়ক থেকে বিস্তীর্ণ মাঠে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যায়। সবুজ ধানের জমিতে যেন দুই হাত প্রসারিত করে বিভিন্ন দাবি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুকে বুলেট পেতে নেওয়ার দৃশ্য দেখতে পেয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।
কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. এনামুল হক গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাসাহারা গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে। এর আগে, গত বছর একই জমিতে ধান গাছ দিয়ে ‘জাতীয় পতাকা’ ও ২০২২ সালে ‘মা’ শব্দটি ফুটিয়ে তোলায় তিনি বেশ আলোচনায় আসেন।
এনামুলের বাবা মারা গেছেন। মা জোহরা বেগম (৬৫) ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার সংসার। তার শস্যচিত্র দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন, প্রশংসাও করছেন কেউ কেউ।
শস্যচিত্রের নির্মাতা এনামুল হক বলেন, ২০২১ সালে প্রথম তার এক বিঘা জমিতে বেগুনি ধান রোপণ করেন। পরের বছর মাকে ভালোবেসে ব্যতিক্রম কিছু করার পরিকল্পনা করেন। সেই চিন্তা থেকে এক বিঘা জমিতে বাংলায় ‘মা’ শব্দটি শস্যচিত্রে রূপ দেন। তখন তার মা অনেক খুশি হয়েছিলেন। অনেক দর্শনার্থী সেই শস্যচিত্র দেখে প্রশংসা করেছিলেন। সেই উৎসাহ থেকে পরের বছর জাতীয় পতাকার শস্যচিত্র তৈরি করেন, আর এবার আঁকেন শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি।
এনামুল হক বলেন, প্রথমে সুতা দিয়ে আবু সাঈদের অবয়ব তৈরি করেন। এরপর সেই গঠন অনুযায়ী, রোপণ করেন দুই জাতের ধান গাছ। তার সঙ্গে ধান রোপণে সহযোগিতা করেছেন আরও কয়েকজন। শহীদ আবু সাইদের উৎসর্গ স্মরণীয় করতেই তিনি এবার শস্যচিত্রে তা ফুঁটিয়ে তুলেছেন।
সোমবার ( ২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে সরেজমিনে গিয়ে টেংরা সড়কের পাশ থেকে দাঁড়িয়ে জমিতে রোপন করা ধান গাছ দিয়ে শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতির ছবি দেখা গেছে । পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শনার্থী রেজাউল করিম বলেন, ধান রোপণের সময় তিনি এ সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে কারখানার মিনি বয়লার বিস্ফোরণে ২০ শ্রমিক আহত
সন্তানের এমন উদ্যোগের বিষয়ে এনামুল হকের মা জোহরা বেগম বলেন, আমার ছেলে শখ করে এগুলো করেছে। মা হিসেবে বিষয়গুলো আমার ভালো লাগে। খারাপ তো কিছু করছে না। মানুষ তার প্রশংসা করে। আমিও তাকে উৎসাহ দিই।
এ উদ্যোগ সম্পর্কে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, কৃষক এনামুল হকের শস্যচিত্রের কথা শুনেছি। এটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
এসডি/