পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো রেকর্ড পরিমাণ টাকা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯:০০ অপরাহ্ন, ১২ই এপ্রিল ২০২৫

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে এ যাবৎকালের সব রেকর্ড ভেঙে টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় সিন্দুক খোলার পর দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা গণনা শেষে বিকেল ৫টায় মোট টাকার পরিমাণ জানা যায়।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিললো রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।
এ নিয়ে এই পর্যন্ত মোট দানের পরিমাণ দাঁড়ালো ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৩ টাকা, যা স্থানীয় একটি ব্যাংকে জমা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ক্রোয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ৪ মাস ১১ দিন পর শনিবার ১১টি দানসিন্দুক খোলা হয়। পরে সকাল ৯টায় মসজিদের ২য় তলার মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা কার্যক্রম। এর আগে ব্যাংকে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা ছিল।
সিন্দুক খোলার পর সবার চক্ষু চড়কগাছ। সিন্দুক থেকে বের হয়ে আসে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। বস্তার অঙ্কে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮ বস্তা। গণনায় অংশ নেন ২৪৭ শিক্ষার্থী। এসময় টাকা গণনার কার্যক্রমে জেলা প্রশাসনের ২৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ শিক্ষক, ১৪ সেনাসদস্য, ৩০ পুলিশ সদস্য, ১০ আনসার সদস্য, ৮০ জন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবার তিন মাস পর পর খোলা হলেও এবার ৪ মাস ১১ দিন পর খোলা হয়েছে পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক।
প্রসঙ্গত, পাগলা মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে মুসলমান ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এ মসজিদে দান করে থাকেন। আর এজন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন দান করতে ছুটে আসেন। শুধু টাকা-পয়সা না, এখানে টাকার পাশাপাশি সোনা-রুপার অলঙ্কারসহ বিদেশি মুদ্রাও দান করে থাকেন। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, ফলফলাদি, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই দান করে লোকজন।
সিন্দুক খোলার সময় জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেনা, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় চেয়ে পাগলা মসজিদে চিঠি
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, মসজিদের দান সিন্দুক থেকে পাওয়া টাকাগুলো ব্যাংকে রাখা হয়। সেখান থেকে যে লভ্যাংশ পাওয়া যায় তা দিয়ে এই অঞ্চলের মসজিদ-মাদ্রাসা উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। একই সঙ্গে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত মানুষদের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই শেষে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে মসজিদ ঘিরে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করা হচ্ছে। ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণে প্রায় ১১৫/১২০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। যেখানে একসঙ্গে ৩০ হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। থাকবে ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ বছর যাবত এই মসজিদের কোনো খাজনা ও ভূমিকর দেওয়া হয়নি। গত মাসে তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই জায়গাটুকু পাগলা মসজিদের নামে নামজারি করা ছিল না। সেটিও করা হয়েছে। কিছু জায়গা রয়েছে পাগলা মসজিদের ভেতরে যেগুলো এখনো ব্যক্তি মালিকানাধীন রয়েছে। যদি একটি আধুনিক ইসলামিক কমপ্লেক্স করতে চাই তাহলে অবশ্যই এই জায়গাটুকু আমাদের আওতাভুক্ত আনতে হবে। তার জন্য ওয়াকফ বরাবর চিঠি লেখা হয়েছে। অনুমোদন পেলে জমি কিনে ইসলামিক কমপ্লেক্স স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

মির্জাপুরে রাস্তা বন্ধ করে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রাচীর নির্মাণ,রাস্তার দাবিতে মানববন্ধন

স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর শ্বশুরকে খবর

টাঙ্গাইলের শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা পেলেন মির্জাপুর থানার মোশারফ হোসেন

শ্রীপুরে ট্রাকের সঙ্গে সিএনজির ধাক্কায় ধান কাটা শ্রমিক নিহত
