ঈদে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল: ৭ দিনে ৪ লাখ ভ্রমণকারী, ৪ শত কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:১৪ অপরাহ্ন, ১৪ই জুন ২০২৫

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে এবার ঈদের টানা সমাগম ঘটে লাখো পর্যটকের।
ঈদের দিন ৭ জুন থেকে শুক্রবার (১৩ জুন) পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ পর্যটন স্পটেগুলোতে পর্যটকের উপস্থিতি দেখা মিলেছে ব্যাপকহারে।
তবে কক্সবাজারে প্রতিদিন কত জন পর্যটক ভ্রমনে আসেন তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান সরকারি বা বেসরকারিভাবে বলা সম্ভব না। একই সঙ্গে আগত পর্যটকদের পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাত সমুহে কত ব্যবসা করেন তারও অর্থের সঠিক পরিমাণ বলা সম্ভব না।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সাগরে নেমে বাবা-ছেলেসহ দুইদিনে ৪ জনের মৃত্যু
কক্সবাজারের সাড়ে ৫ শ’র অধিক আবাসিক হোটেল মোটেলের কক্ষের ভাড়া বিবেচনায় পর্যটকদের একটি সংখ্যা ধারণা করে থাকে। তেমনি ধারণা মতে এবার ঈদের ছুটির ৭ দিনের ৭ লাখ পর্যট ভ্রমণে এসেছেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আর কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ধারণা মতে, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ৫ টি খাতে এবার ঈদে কমপক্ষে ৭ শত কোটি টাকা ব্যবসা হয়েছে।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানিয়েছেন, এবার ঈদের ছুটিতে প্রথম দিন পর্যটকের উপস্থিতি কম ছিল। এরপর থেকে পর্যটক আসতে শুরু করে। ৭ দিনে আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেয়ার হিসেবে পর্যটকের সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হবে না। শুক্রবার থেকে পর্যটক কমতে শুরু করেছে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাত বলতে ৫ টি খাতকে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মধ্যে আবাসিক খাত হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ, খাবারের রেস্তোঁরা ও অন্যান্য, সৈকতের কিটকট, বাইক, ঘোড়া, ফটোগ্রাফার, হকার সহ বিভিন্ন খাত, শুটকি, বামির্জ সহ নানা ধরনের দোকান এবং দূর পাল্লা পরিবহন ও অভ্যন্তরের যোগাযোগের যান খাত রয়েছে। পর্যটক ভ্রমনে আসার সঠিক পরিসংখ্যা যেমন ধারণার উপর নির্ভর। পর্যটন খাতে ব্যবসাও ধারণা করে বলা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আমরা জরিপ করে দেখেছি কক্সবাজারে আগত পর্যটকরা এই ৫ টি খাতে কমপক্ষে গড়ে ১০ হাজারের বেশি টাকা খরচ করেন। এবার ছুটিতে ৪ লাখ পর্যটক ভ্রমনে আসলে কমপক্ষে ৪ শত কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয়েছে বলে ধারণা করা যেতে পারে।
তিনি সরকারিভাবে আবাসিক হোটেলের ডাটা অনলাইনে সংগ্রহ করে কক্সবাজারে ভ্রমনে আসা পর্যটকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের প্রস্তাব দেন।
এদিকে ঈদের ছুটিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।
আরও পুড়ন: কক্সবাজারে রোদ আর সাগরের উত্তাপেও মাতোয়ারা পর্যটক
সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের সাগরতীরে ঢল নেমেছে লাখো পর্যটকের। যারা প্রতিনিয়ত মেতে রয়েছে জেড স্কী, বিচ বাইক, ঘোড়ার পিঠে, কিটকটে বসে ও ক্যামেরায় প্রিয়মুহুর্তগুলো ফ্রেমে বন্দি করতে। একই পর্যটকরা মেতেছেন কেনাকাটায়ও। কিনছেন বার্মিজ পণ্য, শুটকি, শামুক-ঝিনুক, মুক্তার গহনা, আচার সহ নানা পণ্য সামগ্রী। যার কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে সৈকতপাড়ের বার্মিজ পণ্যের দোকানদার, ফটোগ্রাফার, জেড স্কী চালক, বিচ বাইক চালক ও হকারদের। আর ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ ও রিসোর্টগুলো এখন পর্যটকে কানায় কানায় পূর্ণ। সেখানেও পর্যটকদের সেবায় ব্যস্ততার শেষ নেই কর্তৃপক্ষের। এছাড়া পর্যটকের আগমনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা বেশ সরগরম।
এসডি/