জাতীয় ফল মেলা
কৃষকের স্টলে ব্যবসায়িদের সয়লাব
মো. রুবেল হোসেন
প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ১৯শে জুন ২০২৫

প্রতিবছরের মত এবারও জাতীয় ফল মেলার আয়োজন করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় “দেশি ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই” সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতীয় ফল মেলা শুরু হয়ে শেষ হবে শনিবার (২১ জুন)। উদ্দেশ্য ছিল উদ্যোক্তা ও কৃষক তাদের ফল প্রদর্শন ও বিক্রয় করবে। কিন্তু ঘটনা সম্পন্ন উলটো ঘটেছে।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় ফল মেলা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের নামে দেওয়া স্টল বরাদ্দ পেয়েছেন ফল ব্যবসায়ীরা। এখানে তেমন কোন কৃষি উদ্যোক্তা ও কৃষকের স্টল চোখে পড়েনি। ব্যবসায়িদের অনেকের কাওরান বাজার, ইন্দিরা রেড ও মোহাম্মদপুরে ফল আড়ৎ বা দোকান রয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি: আইএসপিআর
জাতীয় ফল মেলায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে কৃষি তথ্য সার্ভিস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কপোরেশন ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের স্টল। এ সকল সরকারি দপ্তরের স্টোল নম্বর কাগজে কলমে থাকলেও প্রদর্শনী স্টোলের গাঁয়ে নেই কোন নম্বর।
মেলায় স্টল ঘুরে দেখা যায়, পিতা-পুত্র মিলে তুলি ম্যাংগো এন্ড ম্যাংগো প্রোডাক্টস ও দেওয়ান এগ্রো ফার্ম নামের দুটি স্টল বরাদ্দ পেয়েছে। তাদের স্টল নম্বর ৪৩ ও ৪২। কিভাবে স্টল বরাদ্দ পেয়েছেন জানতে চাইলে মিস্টি নামের একজন কর্মচারি জানান তারা নওগা থেকে আম ক্রয় করে মেলায় স্টল বরাদ্দ নিয়েছেন।
৬৪ নম্বর স্টলের মো. আব্দুর বাছির বদু মিয়া নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আব্দুর বাছির বদু মিয়া জানান তার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে দোকান রয়েছে তিনি রাজশাহী ও নওগাঁ থেকে আম ক্রয় করে মেলায় বিক্রি করছেন। এমনকি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক প্রকল্পের অফিস সহায়কও দিয়েছেন স্টল।
আরও পড়ুন: গুম হওয়া ব্যক্তিদের চার পরিণতি, দেওয়া হতো জঙ্গি তকমা
কৃষক বা উদ্যোক্তাবিহিন জাতীয় ফল মেলায় সাজসজ্জায় ব্যয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। একক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোন প্রকার দরপত্র ছাড়ায় কাজ করেছেন বছরের পর বছর। টারটেলস নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ৫ বছর ধরেই কেন রকম দরপত্র ছাড়ায় কাজ করছেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫ লাখ টাকা মূল্যের অধিক ক্রয় ক্ষমতা হলে তা দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের সুযোগ থাকলেও কর্মকর্তাদের আখের গোছাতেই দিনের পর দিন চলে আসছে এমন নিয়ম।
জানা যায়, ফল মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদনের সময় ব্যবসায়ীরা কৃষক ও উদ্যোক্তা পরিচয়ে আবেদন করেন। কিন্তু তা সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করতে ব্যর্থ হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জাতীয় ফল মেলা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি কমিটি থাকলেও তারা তা সঠিক ভাবে যাচাই না করার ফলে কৃষকের আসনে ব্যবসায়িদের আসনগ্রহণ হয়েছে। প্রকৃত কৃষক ও উদ্যোক্তা রয়ে গেছে অগোচরে।
কৃষক ও উদ্যোক্তা ছাড়া কিভাবে ফল মেলা পরিপূর্ণতা পাবে এমন পশ্নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হর্টিকালচার সেন্টারের পরিচালক কৃষিবিদ এস. এম. সোহরাব উদ্দিন জনবাণী বলেন, আমরা আমাদের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছি। তথ্য গোপন করে কৃষক বা উদ্যোক্তার স্থানে অন্য কেউ স্টল বরাদ্দ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

পরিবর্তন এসেছে ৪৬ সংসদীয় আসনের সীমানায়

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন ইউএনএইচসিআরের নতুন প্রতিনিধি

হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়সীমা নিয়ে যা জানাল মন্ত্রণালয়
