তেহরানে ‘তীব্র হামলার’ নির্দেশ, পাল্টা হুঙ্কার ইরানের


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩:৫৭ অপরাহ্ন, ২৪শে জুন ২০২৫


তেহরানে ‘তীব্র হামলার’ নির্দেশ, পাল্টা হুঙ্কার ইরানের
সংগৃহীত ছবি।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইরানে আরও জোরালো হামলা চালানোর নির্দিশ দিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।


যদিও ইরানের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতিতে কোনো হামলা চালালো হয়নি বলে জানান হেয়েছে। এরপরও যদি ইসলায়েল হামলা চালায় তাহলে ভয়াবহ জাবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।


মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিবিসি, আল-জাজিরা ও সিএনএন এ তথ্য জানায়। 

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করে জানান, তারা ইরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে।


আরও পড়ুন: ইরান থেকে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে,দাবি ইসরায়েলের


এরপর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। জবাবে তেহরানে জোরালো হামলা করতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান জেনারেল স্টাফ জানান, ইরানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে সামরিক বাহিনী ‘শক্তির সাথে’ জবাব দেবে।


ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ সামাজিক মাধ্যম এক্সে জানান, ‘তেহরান কাঁপবে’।


অন্যদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইরান থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়নি। 



ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সতর্ক করে বলেছে, আরও যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে ইরান একটি সিদ্ধান্তমূলক, দৃঢ় এবং সময়োপযোগী প্রতিক্রিয়া জানাবে।


উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।


হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।


ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।


দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। 


আরও পড়ুন: যুদ্ধ শেষ করতে চায় ইসরায়েল, ইরানের কাছে প্রস্তাব


তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।


এসডি/