গাজায় ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেন ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, ২৭শে জুন ২০২৫


গাজায় ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেন ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

দখলদার ইসরাইয়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় তাদের সামরিক অভিযান সম্পন্ন ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযান শিগগির বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।


বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় লাপিদ বলেন, “গাজায় আমরা যা করছি, তা আর কাজ করছে না। এই যুদ্ধ একটি অচলাবস্থা তৈরি করেছে এবং এখন সময় এসেছে গাজায় সামরিক অভিযান থামানোর। যখন কোনো কৌশল ব্যর্থ হয়— তখন তা পরিত্যাগ করতে হয়।”


২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।


আরও পড়ুন: ইউসুফ (আ.)-এর পবিত্র মাজার এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ


হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন।


টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।


কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। সেই সঙ্গে গাজায় খাবার ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে গাজায়।


যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।


আরও পড়ুন: ২ দেশে হামলা চালাল ইসরায়েল, নিহত ৩৭


জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।


এই যুদ্ধের শুরু থেকেই মধ্যস্থতার ভূমিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার এই তিন দেশ। কয়েক মাস আগে তেল আবিব এবং হামাস— উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছিল মধ্যস্থতাকারীরা, কিন্তু কোনো পক্ষই এ পর্যন্ত এ ইস্যুতে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।


গাজায় ধংসযজ্ঞ চালানোর পরিবর্তে সেখানে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের উদ্ধারে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত— উল্লেখ করে এক্সপোস্টে ইয়াইর লাপিদ নেতা বলেন, “আমাদের নাগরিকরা এখনও গাজায় জিম্মি হয়ে আছে। তাদের উদ্ধারের ব্যাপারটি এখনও অনিশ্চিত। এই যুদ্ধ থেকে আমরা আর কী পাবো— তা আসলে কেউই বুঝতে পারছে না।” সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।


এমএল/