ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে শীর্ষে বাংলাদেশিরা


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, ১৬ই জুলাই ২০২৫


ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে শীর্ষে বাংলাদেশিরা
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশকারী অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত নিরাপত্তা সংস্থা ফ্রন্টেক্স এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।


ফ্রন্টেক্স জানায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ইইউ-এর বহিঃসীমান্ত দিয়ে ৭৫,৯০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক।


অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যেও বাংলাদেশিদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে ফ্রন্টেক্স।


ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে ৩১,৯৪৮ জন অনিয়মিত অভিবাসী প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে ১০,৩১১ জন বাংলাদেশি, যা মোট প্রবেশকারীর ৩২ শতাংশ। এই সংখ্যাটি ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।


বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ইরিত্রিয়া (৪,৪৬১), মিশর (৩,৭২৩), পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, টিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাগরিকেরা।


ফ্রন্টেক্সের তথ্য অনুযায়ী, সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট এখনও সবচেয়ে ব্যস্ত। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে এই রুটে ২৯,৩০০ অভিবাসী শনাক্ত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। শুধু লিবিয়ার উপকূল থেকেই ২০,৮০০ অভিবাসী ইতালিতে এসেছেন — যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।


অন্যদিকে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয়, পশ্চিম বলকান, পশ্চিম আফ্রিকান এবং স্থল রুটগুলো দিয়ে আগমন গত বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।


তবে, লিবিয়া থেকে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপ পর্যন্ত নতুন একটি রুট চালু হওয়ায় পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় পথে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আগমন আবার বাড়তে শুরু করেছে।


প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত ইতালিতে প্রবেশকারী সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৫,৫৭৫ জন। ২০২৪ সালের পুরো বছরেও এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৮,৭৫২।


ফ্রন্টেক্স এবং আইওএম উভয় সংস্থার মতে, সামগ্রিকভাবে অবৈধ অভিবাসনের হার কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট, পাচার এবং সমুদ্রপথে মৃত্যুর হার এখনও উদ্বেগজনক মাত্রায় রয়েছে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ভেতরে দারিদ্র্য, বেকারত্ব, রাজনৈতিক অস্থিরতা, মানবপাচারকারী চক্রের প্রলোভন এবং ইউরোপে ভালো জীবনের আশাই বাংলাদেশিদের এই বিপজ্জনক পথে ঠেলে দিচ্ছে।


আরএক্স/