জুলাই আন্দোলনে সেবা দেওয়া চিকিৎসকরাই সত্যিকারে নায়ক: প্রধান উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৮ অপরাহ্ন, ২৮শে জুলাই ২০২৫

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, যুদ্ধের সময়েও আহতদের চিকিৎসা বন্ধ রাখা যায় না। অথচ বাংলাদেশে চব্বিশের জুলাই বিপ্লব চলাকালে সেই নীতির লঙ্ঘন ঘটেছে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত, আজই পাঠানো হবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে
তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে ক্ষান্ত না থেকে, হাসপাতালে যেন কেউ চিকিৎসা না পায়- সেই চেষ্টার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, চিকিৎসকদের উপর হামলা, হুমকি, এমনকি পরিবারকেও আতঙ্কে রাখার পরও যারা আহতদের সেবা দিয়েছেন, তারাই এই জুলাইয়ের সত্যিকারের নায়ক।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে আহত আন্দোলনকারীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানে আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠান’-এ এক ভিডিও বার্তায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।
জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসকদের মানবিক অবদানের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনের সময় আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ার সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই বাধা ভেঙে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিছু চিকিৎসক। আপনারা এই জুলাইয়ের অন্যতম নায়ক। আপনারা এই জুলাইয়ে সাহস এবং দায়িত্ববোধের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। এই দুঃসময়ে আপনারা যে সেবা দিয়েছেন তা আমরা কোনোদিন ভুলবো না।
তিনি জানান, ছাত্রদের রাস্তায় পিটিয়ে আহত করার পর মেডিকেলেও তাদের উপর হামলা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের উপর নানাধরনের হুমকি-ধামকি এসেছে, এমনকি তাদের চিকিৎসা কার্যক্রমেও বাধা দেওয়া হয়েছে। শত শত ছেলে-মেয়ে অন্ধত্ব বরণ করেছে, যারা সঠিক সময়ে চিকিৎসা পায়নি। নির্দেশ ছিল, আন্দোলনে আহতদের কাউকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে না।
এই প্রেক্ষাপটেও যেসব চিকিৎসক আহতদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, আপনারা নিজেরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন, তেমনি আপনাদের পরিবারগুলোও এক ধরনের আতঙ্ক এবং ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তবুও পাহাড়সম বাধা অতিক্রম করে মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি মেডিকেল টিমের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
তিনি আরও জানান, চিকিৎসকরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রক্ত সংগ্রহ, ওষুধ সরবরাহ করেছেন, এমনকি রোগীর নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে চিকিৎসা দিয়েছেন যাতে পুলিশ চিহ্নিত করতে না পারে। অনেক প্রাইভেট চিকিৎসক স্বেচ্ছায় সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। আপনারা শুধু সেবা দেননি, মানবিকতা, দায়িত্ববোধ এবং সাহসিকতার নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন। এই অবদান কখনো ভুলবো না। আপনারা এই দুঃসময়ে মানবিকতার যে আলো জ্বালিয়েছেন, সেটাই এই জুলাই বিপ্লবের সবচেয়ে গর্বের অংশ।
এসডি/