নিউইয়র্কে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৫


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:২০ পূর্বাহ্ন, ২৯শে জুলাই ২০২৫


নিউইয়র্কে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৫
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের একটি অফিস ভবনে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। 


স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেলে পার্ক অ্যাভিনিউর ব্যস্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার নাম দিদারুল ইসলাম (৩৬)। তিনি নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে (NYPD) তিন বছর ছয় মাস কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে ছুটিতে ছিলেন। দিদারুলের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা এবং তার রয়েছে দুটি ছোট সন্তান।


নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক বিবৃতিতে বলেন, “তিনি যেমন সাহসিকতার সঙ্গে জীবনের দায়িত্ব পালন করেছেন, তেমনি বীরের মতো বিদায় নিয়েছেন।”


পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্যক্তি হলেন শেন তামুরা, যিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা। তার মানসিক সমস্যার পূর্ব ইতিহাস ছিল বলে জানা গেছে। হামলার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো উদঘাটন হয়নি।


সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারী একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এম৪ রাইফেল হাতে ভবনের দিকে এগিয়ে যান। প্রবেশ করেই তিনি প্রথমে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গুলি করেন। এরপর আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করা এক নারী, নিরাপত্তাকর্মী এবং আরও এক ব্যক্তিকে গুলি করেন।


এরপর ভবনের ৩৩ তলায় উঠে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে ঢুকে আরও একজনকে গুলি করে হত্যা করেন এবং পরবর্তীতে নিজেই আত্মহত্যা করেন।


এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি রাইফেল কেস, একটি রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে।


নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, “পাঁচজন নিরপরাধ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এটি আমাদের শহরের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক মুহূর্ত।”


নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিস স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভবনটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক এলাকা, যেখানে ব্ল্যাকস্টোন, আয়ারল্যান্ড কনসুলেট এবং ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (NFL) অফিস রয়েছে।


এক প্রত্যক্ষদর্শী জেসিকা চেন বলেন, “আমরা একটি উপস্থাপনায় অংশ নিচ্ছিলাম, হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে সবাই কনফারেন্স রুমে গিয়ে নিজেকে লুকিয়ে ফেলি। আমরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”


ঘটনার পর পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী সড়ক ও গণপরিবহন।


উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত নিউইয়র্কে বন্দুক সহিংসতা ও হত্যার হার বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল। এই ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠছে দেশটির অস্ত্র আইন ও মানসিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।


আরএক্স/