হিমাচলে ভয়াবহ বর্ষণ ও ভূমিধস: নিহত ১৮৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫:৫০ পিএম, ৪ঠা আগস্ট ২০২৫

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য রাজ্য হিমাচল প্রদেশে টানা দুই সপ্তাহের প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত এবং ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ১৮৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের জীবনযাত্রা ও অবকাঠামো।
দুর্যোগের কারণে রাজ্যের ৩০৫টি জাতীয় মহাসড়কসহ মোট ৩০৯টি সড়ক এখন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ধসে পড়েছে ২৩৬টি জলাধার এবং ১১৩টি বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার, যার ফলে রাজ্যের বহু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা।
নিহতদের মধ্যে ১০৩ জন মারা গেছেন ভূমিধস (১৭ জন), আকস্মিক বন্যা (৮ জন), মেঘভাঙা বৃষ্টি (ক্লাউডবার্স্ট-১৭ জন), বিদ্যুৎপৃষ্ট (৭ জন) বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া (২০ জন)-সহ বর্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্যোগে। বাকি ৮১ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়।
রাজ্যের মান্দি জেলা এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বর্ষাজনিত দুর্যোগে মারা গেছেন ১৪ জন এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন।
বন্যার কারণে রাজ্যের ৮৮ হাজার ৮০০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) পূর্বাভাসে কোনো সুসংবাদ পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ পূর্বাভাসে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে আগামী আরও কয়েক দিন হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে কিংবা লাগাতার বর্ষণ অব্যাহত থাকবে।
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশে ভৌগলিক কারণেই বর্ষাকালে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা, ভূমিধসের ঘটনা বেশি হয়ে থাকে। তার ওপর গত বেশ কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বনাঞ্চল ধ্বংস দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে অপরিকল্পত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংসে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে হয়তো শিগগিরই একদিন ভারতের মানচিত্র থেকে হিমাচল রাজ্যের নাম মুছে যাবে।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি ছাড়া পাহাড়ি রাজ্যগুলোর ভবিষ্যৎ এখন বড় ধরনের হুমকির মুখে। পরিবেশ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপই হতে পারে এই বিপর্যয়ের একমাত্র প্রতিকার।
সূত্র : এনডিটিভি অনলাইন
এসডি/