গাজা সীমান্তে ত্রাণবাহী ২২ হাজার ট্রাক আটকে রেখেছে ইসরায়েল, অনাহারে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে গাজা উপত্যকার সীমান্তে আটকে আছে ২২ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক, যার ফলে অঞ্চলটিতে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। চরম খাদ্য ও পুষ্টিহীনতায় মৃত্যু বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে গাজা উপত্যকার সীমান্তে আটকে আছে ২২ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক, যার ফলে অঞ্চলটিতে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। চরম খাদ্য ও পুষ্টিহীনতায় মৃত্যু বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডঋচ) জানিয়েছে, গাজায় পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু এখন প্রাণঘাতী অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, পুষ্টি সেবা অবকাঠামো ধ্বংস হওয়া, নিরাপদ পানির অভাব, বুকের দুধের বিকল্প না থাকা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার পতনের কারণে শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ একেবারে থেমে গেছে।
বিজ্ঞাপন
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সিমা জিলানি বলেন, “অপুষ্টি শিশুদের পুরো দেহকে আক্রান্ত করে, যার ফলে একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একসঙ্গে বিকল হয়ে যেতে পারে।”
মৃত্যু বেড়েই চলেছে
বিজ্ঞাপন
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন শিশু। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এমন মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮১ জনে, যার মধ্যে ৯৪ জনই শিশু।
এছাড়া, সংক্রমণ ও চরম অপুষ্টিজনিত স্নায়বিক পক্ষাঘাতের (হবঁৎড়ষড়মরপধষ ঢ়ধৎধষুংরং) ফলে আরও তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞাপন
ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ আটকে রাখার অভিযোগ
গাজার সরকার অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ২২ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজার ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না, যা তারা ‘ক্ষুধা, অবরোধ ও বিশৃঙ্খলার সুস্পষ্ট নীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় পূর্ণ অবরোধ জারি রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
“মানবিক বিপর্যয়ের মুখে গাজা”
শিশু অধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন-এর মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক আহমাদ আলহানদাভি বলেন, “গাজায় পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ বিপর্যয়কর। এই অবরোধ ও ক্ষুধা দীর্ঘদিনের জমে থাকা মানবিক সংকটের বহিঃপ্রকাশ।”
বিজ্ঞাপন
সংগঠনটি জানিয়েছে, জুলাই মাসে তাদের পরিচালিত ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা ৪৩ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারী অপুষ্টিতে ভুগছিলেন, যা মার্চ মাসের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। তারা আরও জানায়, গাজায় শিশুখাদ্য প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আলহানদাভি সতর্ক করে বলেন, “অপুষ্টির শিকার কিছু শিশুর ক্ষেত্রে হয়তো পুনরুদ্ধার সম্ভব, কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা আর সম্ভব নয়। এটি চরম বাস্তবতা।”
ভয়াবহ প্রাণহানির হিসাব
বিজ্ঞাপন
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০,৯৩৩ জন, আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি মানুষ। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
সূত্র: আল-জাজিরা








