এক বছরে সরকারের ১২ সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:০৭ পিএম, ৭ই আগস্ট ২০২৫

আগামীকাল (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই এক বছরের মাথায় সরকারের অর্জন ও সাফল্য নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ১২টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব সাফল্য তুলে ধরেন।
প্রেস সচিবের তুলে ধরা অন্তর্বর্তী সরকারের ১২ সাফল্য:
১. শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা: জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়। প্রতিশোধমূলক রাজনীতির বদলে পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়ার নৈতিক নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক ইউনূস।
২. অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার: খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ৮.৪৮ শতাংশে—৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। রেমিট্যান্সে রেকর্ড (৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার), রপ্তানি বৃদ্ধি (৯ শতাংশ), এবং টাকার মানও স্থিতিশীল হয়।
৩. বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অগ্রগতি: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন, ২৫ কোটি ডলারের হান্ডা গ্রুপ বিনিয়োগে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান, দ্বিগুণ বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি।
৪. গণতান্ত্রিক সংস্কার ও ‘জুলাই সনদ’: ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য এবং ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন, যা ভবিষ্যতে স্বৈরতান্ত্রিক পুনরাবৃত্তি রোধে কাঠামোগত জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।
৫. মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু। শেখ হাসিনাসহ চারটি বড় মামলায় বিচার চলছে।
৬. নির্বাচন পরিকল্পনা ও সংস্কার: ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ। তরুণ, নারী ও প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তি, অনলাইন মতামত প্ল্যাটফর্ম এবং নিরাপত্তায় ৮ লাখ সদস্যের প্রস্তুতি।
৭. প্রতিষ্ঠানিক ও আইনি সংস্কার- বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরও মজবুত করা হয়েছে।
পুলিশ সংস্কার: মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম, স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ, জাতিসংঘ মানের প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণ প্রটোকল চালু।
আইনি সংস্কার: দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে বড় পরিবর্তন, গ্রেপ্তারের পর ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের কাছে জানানো।
৮. গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার: সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল, সাংবাদিকদের সব মামলার অবসান ও ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা।
৯. বহুমাত্রিক পররাষ্ট্রনীতি: যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন, সার্ক পুনর্জাগরণ ও আসিয়ানে সদস্যপদ অর্জনের পদক্ষেপ।
১০. প্রবাসী ও শ্রমিকদের অধিকার: আমিরাতে পুনরায় ভিসা চালু, মালয়েশিয়ায় মাল্টিপল এন্ট্রি, অবৈধ শ্রমিকদের বৈধতা, জাপানে ১ লাখ তরুণ পাঠানোর উদ্যোগ, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও সার্বিয়ায় শ্রমবাজার সম্প্রসারণ।
১১. বিপ্লবীদের সহায়তা: ৭৭৫ শহীদ পরিবারকে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, ১৩ হাজার ৮০০ আহত বিপ্লবীর মাঝে ১৫৩ কোটি টাকা বিতরণ ও গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা।
১২. সমুদ্র ও অবকাঠামো উন্নয়ন: বঙ্গোপসাগরকে জল-ভিত্তিক অর্থনীতির মূল সম্পদ ঘোষণা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় উন্নয়ন প্রকল্প সম্প্রসারণ, গভীর সমুদ্রে মৎস্য ও শিল্প প্রকল্পে বৈশ্বিক অংশীদারদের সম্পৃক্তি।