মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:১২ পিএম, ২৬শে আগস্ট ২০২৫


মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
ছবি: প্রতিনিধি

কক্সকবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে মাহিয়া নামের সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ের মো: সোলাইমান (৩২) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 


মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো: ওসমান গণি এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে অপহরণ, মরদেহ গুমের দায়ে দুইধাপে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত যুবক সোলেমান উখিয়ার উপজেলার পালংখালী চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের ছেলে।


রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু।


মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোলাইমান মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ নেয়। এরপর বিয়ে করে ওই বছরের অক্টোবর সে মাহির চাচার বাসা ভাড়া নেয়। সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিল। এক পর্যায়ে ৩০ নভেম্বর মাহিয়া স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর খেলতে বের হয়। এ সময় বাড়িতে স্ত্রী না থাকার সুযোগে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে অপহরণ করে ভাড়া বাসায় নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে সোলাইমান।


এতে মাহি অজ্ঞান হয়ে পড়লে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাগেজের ভেতর ঢুকিয়ে রাতের অন্ধকারে অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া এলাকায় লবণ মাঠে ফেলে দেয়। এর পরদিনই পুলিশ সোলাইমান ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেন।


আরও পড়ুনবনানীতে পোশাকশ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট


কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকউটির মোশারফ হোসেন টিটু জানান, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাইরার ডেইল এলাকার আয়াত উল্লাহর মেয়ে ও দক্ষিণ সাইরার ডেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়াকে অপহরণের পর ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর মরদেহ পেকুয়ার উজানটিয়ার কররিয়ারদিয়ার লবণ মাঠে ফেলে দেন উখিয়ার উপজেলার পালংখালী চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের ছেলে মো: সোলাইমান।


এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক রায় ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও রায়ে হত্যা, অপহরণ, মরদেহ গুমসহ আরও একটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড, দুইধাপে যাবজ্জীবন ও সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।


তিনি বলেন, সোলাইমান আগে টেকনাফে তার বিবাহিত স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এই ঘটনার পর পলাতক অবস্থায় শিশু মাহিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এ ঘটনাও আমলে রেখে বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘সোলাইমান একজন সিরিয়ার কিলার হিসেবে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছিল। তাকে এই মুহূর্তে না থামালে এরকম ঘটনা ঘটাতে থাকবে।’


রায় ঘোষণাকালে একমাত্র আসামি মো: সোলাইমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ রায়ে শিশুর মাহিয়ার পিতা আয়াত, আইনজীবি ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষ জানিয়েছে তারা ন্যায় বিচার পায়নি। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।


এসএ/