স্লোগান দিয়ে গ্রেফতার বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ, দুশ্চচিন্তায় পরিবার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:১৪ এএম, ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫


স্লোগান দিয়ে গ্রেফতার বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ, দুশ্চচিন্তায় পরিবার
ছবি: সংগৃৃহীত

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার হয়েছেন বাকপ্রতিবন্ধী যুবক সাইদ শেখ (২২)। মামলায় তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠনের মিছিলে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে পরিবারের দাবি, সাইদ শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি স্লোগান দেওয়া বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার মতো সক্ষম নন।


রবিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশে আওয়ামী লীগের একটি ঝটিকা মিছিল ঘিরে তিনজনকে আটক করে পুলিশ। আটকরা হলেন—রাজু আহমেদ, শেখ মো. শাকিল ও সাইদ শেখ। ওইদিনই পল্টন থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে বড় ধরনের নাশকতার চেষ্টা করছিল।


পরদিন সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।


আরও পড়ুন: সাংবাদিক রেদওয়ানুল-আনাসের উপর হামলা


জামিন শুনানিতে সাইদের আইনজীবীরা দাবি করেন, তিনি বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় অভিযোগ অবাস্তব। তবে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাকসুদুল হাসান আদালতে জানান, প্রাথমিকভাবে তাকে বাকপ্রতিবন্ধী বলা হলেও আসলে তিনি তোতলা বা অস্পষ্টভাষী।


এ নিয়ে আদালত কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে সাইদের প্রতিবন্ধকতা যাচাই করে আগামী সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)রের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে।


সাইদের মা সুমি বেগম বলেন, “সে নিজে খেতে পারে না, গোসল বা কাপড় পরতেও সাহায্য লাগে। নিজের কাজ নিজে করতে পারে না। এখন জেলে না খেয়ে আছে, আমরা খুব চিন্তায় আছি। আদালতের কাছে আমার ছেলের মুক্তি চাই।”


আরও পড়ুন: জি এম কাদেরের বাসার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন


তার মামা সুমন বলেন, “জন্ম থেকেই সে প্রতিবন্ধী। রাজনীতি বোঝে না। নিজের কাজই করতে পারে না, সে আবার কীভাবে মিছিলে স্লোগান দেবে?”


আইনজীবী মোহাম্মদ লিটন মিয়া বলেন, “একজন বাকপ্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ আনা আইনের অপব্যবহার ছাড়া কিছু নয়। তাকে পথ থেকে ধরে এনে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।”


এ মামলায় আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য রয়েছে। এর আগে আদালতে সাইদের প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে তার জামিন শুনানি হবে।


এমএল/