অ্যাম্বুলেন্সে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে চালক আটক
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:০৪ পিএম, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

চাঁদপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে (২৪) অ্যাম্বুলেন্সে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে চালক মো. মুরাদ হোসেনকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই নারীর ছোট বোন জামাতা সদর মডেল থানায় চালকসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া।
গ্রেপ্তারকৃত চালক মুরাদ চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া ৯নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোস্তফা বেপারীর ছেলে। আনঞ্জুমান নামীয় অ্যাম্বুলেন্সটি তিনি ভাড়ায় নিয়ে পরিচালনা করতেন। ধর্ষণের শিকার ওই নারী জেলার শাহরাস্তি উপজেলার।
মডেল থানা পুলিশ জানায়, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজগাছতলা নামক স্থানে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ওই সড়কে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইবাদুল হক ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ টহলরত অবস্থায় ছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সটি সড়কের পাশে থামানো অবস্থায় দেখে সন্দেহে হলে তল্লাশি চালিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করেন এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ চালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হৃদয়স্পর্শী মুহূর্ত: পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা পূরণ
গ্রেপ্তার চালক ও অন্যান্য অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চালক মুরাদ হোসেন ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে পাশের লক্ষ্মীপুর জেলায় যান। সেখান থেকে চাঁদপুরে আসার পথে লক্ষ্মীপুর বাসস্ট্যান্ডে ঘুরাঘুরি অবস্থায় ওই নারীকে দেখতে পেয়ে কয়েকজনের সহযোগিতায় যাত্রীবেশে তার অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে আসে। এরপরেই অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে জোরপূর্বক ধষর্ণের ঘটনা ঘটে।
স্বজনরা জানান, ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন এবং স্বামী পরিত্যক্ত। তার বাবা-মার সঙ্গে বাড়িতে থাকেন। মাঝে মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়ির সকলের অজান্তে বের হয়ে যায়। এরপর বাড়িতে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে পায়নি। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পায় নিখোঁজ নারী থানা হেফাজতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল এলাকায় অবস্থানরত একাধিক অ্যাম্বুলেন্স চালক জানান, মুরাদের এ ঘটনাই শুধু নয়, হাসপাতালের কর্মচারি ও সহযোগী অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে প্রায় সময় অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। চাঁদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা রোগীদের ঢাকা মেডিকেলে না নিয়ে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। এটা তার নতুন কাজ নয়, পুরনো অভ্যাস।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, জানতে পেরেছি ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রায় সময় নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত। লক্ষ্মীপুর বাসস্ট্যান্ডে ঘুরাঘুরি অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই নারীকে তুলে নিয়ে আসে। এই ঘটনায় তার আত্মীয় থানায় মামলা করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এসএ/