একটি মাছিও যেন পালাতে না পারে: সেনাদের পুতিনের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
তুমুল যুদ্ধের পর অবশেষে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর মারিউপোল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। তবে, ওই শহরের একটি ইস্পাত কারখানা এখনও দখলে নিতে পারেনি তারা। আজ বৃহস্পতিবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগু দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
মারিউপোলকে ‘সফলভাবে মুক্ত’ করতে পারায় রুশ বাহিনীকে অভিনন্দন জানান পুতিন। মারিউপোলে একটি ইস্পাত কারখানা রয়েছে। পুতিন তাঁর বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যেন ওই ইস্পাত কারখানাটি ধ্বংস না করে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং দখল করে নেয়।
পুতিন বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলটি অবরুদ্ধ করে ফেলুন, যাতে একটি মাছিও পালাতে না পারে।’ বিশাল ওই শিল্পাঞ্চলে হামলা চালানো ‘বাস্তবসম্মত হবে না’ বলেও মন্তব্য করেন পুতিন।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন, ওই শিল্পাঞ্চলে দুই হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় কর্মী রয়েছেন।
এর আগে কোনো শর্ত ছাড়াই মারিউপোলের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহের কথা জানিয়েছিল ইউক্রেন।
ইউক্রেনের বন্দরনগরী বলে পরিচিত মারিউপোল। মারিউপোল যদি সত্যিই রাশিয়ার দখলে এসে থাকে, তাহলে রুশ বাহিনীর জন্য ২০১৪ সাল থেকে রুশ দখলে থাকা ক্রিমিয়ায় যাওয়ার পথ সুগম হলো।
মারিউপোলের দখল নিতে প্রায় দুমাস চেষ্টা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। অবশেষে আজ পুতিন ঘোষণা করলেন, মারিউপোল ‘মুক্ত’।
এদিকে আজ ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মারিউপোলের বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও শিশুদের উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে, এরই মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে রাশিয়া।
অন্যদিকে, যুদ্ধে প্রথম বারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে মারিউপোলসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখলে নিতে তুমুল যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। এ লক্ষ্যে দনবাস অঞ্চলে নতুন করে শুরু করা অভিযানে প্রায় ২০ হাজার ভাড়াটে যোদ্ধা মোতায়েন করে ক্রেমলিন। সিরিয়া, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁদের সেখানে জড়ো করা হয়। একপর্যায়ে সৈন্য, রসদ ও অস্ত্র সংকটে পড়ে ইউক্রেনীয় সেনারা। পরে কোনো শর্ত ছাড়াই মারিউপোলের বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয় ইউক্রেন।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার মারিউপোল নিয়ন্ত্রণে নেবে বলে মন্তব্য করেন ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র রমজান কাদিরভ।
রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে প্রাণ বাঁচাতে ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে গতকাল বুধবার জানায় জাতিসংঘ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট।
এসএ/