গোপন ভিডিও ভাইরালের হুমকি, প্রেমিকার আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
স্নানের গোপন ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি। প্রতিবাদ করলে জুটত নিযার্তন ও মারধর। নিজের ঘর থেকে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় প্রেমিকা তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
গত সোমবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার পাথুরিয়া গির্জা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের প্রেরণ করেছে।
তরুণীর ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেমিক সাউমিন খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, মৌসুমী সরকার (২২) এর সঙ্গে সাউমিন খানের সম্পর্ক তৈরি হয়। সাউমিন ও মৌসুমীর বাবা কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন। দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের পরিচয়। মৌসুমী মায়ের সঙ্গে পাথুরিয়ার বাড়িতে থাকতেন। গোপালনগর থানার সুন্দরপুর এলাকায় বাস সাউমিনের। অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বেশিদিন সে কথা গোপন ছিল না। তাদের সম্পর্কের কথা। দুটি পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন।
তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবকের পরিবারের লোকেরা মৌসুমীর উপর মানসিক অত্যাচার করত। সে কারণে দিনকয়েক মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন মৌসুমী।
মৌসুমীর দিদির দাবি, বোনের স্নান করার গোপন ভিডিও তুলে রেখেছিল সাউমিন। তা দেখিয়েই জোর করে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে সে। বোন সম্পর্কে জড়াতে না চাওয়ায় অত্যাচার করত। মারধর করত সে। স্নানের ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি ও দিত সাউমিন। সোমবার দুপুরে মৌসুমীর মা রান্না করছিলেন। সে সময় মৌসুমী ঘরে একাই ছিল হঠাৎ বাড়িতে কর্মরত রাজমিস্ত্রী তরুণী ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। চিৎকার করতে শুরু করেন। প্রতিবেশীরা দৌড়ে আসে। তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে বনগাঁও মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পর পুলিশ তরুণীর বাড়িতে যায়। তরুণীর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সুইসাইড নোট পুলিশের হাতে তুলে দেয় মা।
তরুণীর মা বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে সুন্দরপুরের ওই যুবক প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। যুবকের বাবা-মা নিয়মিত অপমান করত মেয়েকে। দিন কয়েক আগে ওই যুবক আমার মেয়েকে মারধর করেছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুইসাইড নোটে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে যুবকেই দায়ী করেছে মেয়ে। মঙ্গলবার বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বুধবার গভীর রাতে অভিযুক্ত প্রেমিক সাউমিন খানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রেম সংগঠিত কারণে আত্মহত্যা করেছেন তরুণী।
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিজনেরা।
এসএ/